তিনি বলেন, সরকারের উচিত আওয়ামী লীগের নিবন্ধন বাতিল করে দলটিকে একটি সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে ঘোষণা করা।
জাতীয় নির্বাচনের আগে জুলাই হত্যাকাণ্ডের দৃশ্যমান বিচারের দাবি জানান গণঅভ্যুত্থানের পর তরুণদের নেতৃত্বে আত্মপ্রকাশ করা নতুন রাজনৈতিক দলটির প্রধান।
সোমবার (২৪শে মার্চ) বিকেলে নারায়ণগঞ্জ নগরীর বাংলা ভবন কমিউনিটি সেন্টারে প্রধান অতিথি’র বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
নাহিদ বলেন, সুনির্দিষ্ট তিনটি এজেন্ডা নিয়ে আমরা কাজ করছি। আমরা বলছি, জুলাই গণঅভ্যুত্থানের বিচার, রাষ্ট্রের কাঠামোগত সংস্কার এবং নতুন সংবিধানের জন্য গণপরিষদ নির্বাচন। আওয়ামী ফ্যাসিজমের বিচার যদি নিশ্চিত না করা হয়, তাহলে আরেকটি স্বৈরাচার কিংবা ফ্যাসিবাদ যে দেখবো না সেই নিশ্চয়তা পাবো না। নির্বাচনের আগে দৃশ্যমান বিচার দেখা আমাদের দাবি।
আওয়ামী লীগের পুনর্বাসনের জন্য ‘ষড়যন্ত্র’ চলছে মন্তব্য করে এনসিপি’র আহ্বায়ক বলেন, সম্প্রতি ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের পুনর্বাসনের জন্য নানা ধরনের ষড়যন্ত্র বিভিন্ন দিকে চলছে। জাতীয় নাগরিক পার্টি এ বিষয়ে সুস্পষ্ট অবস্থান ব্যক্ত করেছে। কোনোভাবেই আওয়ামী ফ্যাসিজমকে পুনর্বাসনের চেষ্টা করা হলে জাতীয় নাগরিক পার্টি তা রুখে দিবে।
তিনি আরও বলেন, আওয়ামী লীগ গত ১৫ বছর, এবং ইতিহাসের দিকে তাকালে পাওয়া যায়, এর আগেও তারা বাকশাল তৈরি করেছে। আওয়ামী লীগের গত ১৫ বছরের গণহত্যা, গুম এবং জুলাই হত্যাকাণ্ডের পরে তারা কোনোভাবেই আর রাজনৈতিক দল হিসেবে বিবেচিত হতে পারে না। বরং সরকারের উচিত আওয়ামী লীগকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে ঘোষণা করা। এবং এই দাবি আমরা জানাচ্ছি। একইসাথে আওয়ামী লীগের নিবন্ধন বাতিল করতে হবে।
তিনি বলেনদেশে বিদ্যমান পরিস্থিতিতে সংস্কার জরুরি’ মন্তব্য করে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের অন্যতম এই নেতা বলেন, মানুষ আসলে পরিবর্তন চায়। একই সিস্টেমে আবারও ফেরত যেতে চায় না মানুষ। কিন্তু আমরা দেখছি বিভিন্ন রাজনৈতিক দল পুরোনো বন্দোবস্তের সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে, সংস্কারে তাদের অনাগ্রহ। যাদেরই অনাগ্রহ থাকুক না কেন, জাতীয় নাগরিক পার্টি এবং জুলাই গণঅভ্যুত্থানে যারা একসাথে ছিলাম তারা সংস্কার ও পরিবর্তনের লক্ষে কাজ করে যাবো।
নতুন বাংলাদেশের’ আকাঙ্খা ব্যক্ত করে অন্তর্বর্তী সরকারের সাবেক এ উপদেষ্টা বলেন, নতুন সংবিধানের জন্য একটি গণপরিষদ নির্বাচনের প্রয়োজন। কারণ, পুরোনো সংবিধান দিয়ে একটি নতুন বাংলাদেশ সম্ভব নয়।
তিনি দলীয় নেতা-কর্মীদের সমাজে বিদ্যমান চাঁদাবাজি, দখলদারিত্বের রাজনীতির বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়ার পরামর্শ দেন।
তিনি আরও বলেন জনগণের পাশে দাঁড়িয়ে তাদের সমস্যা সমাধান আমরা করবো। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর যতটুকু সহযোগিতা প্রয়োজন, ততটুকু আমরা করবো। এবং সমাজে যে চাঁদাবাজি, দখলদারিত্বের রাজনীতি রয়েছে তার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে মানুষের অধিকারের পক্ষে কথা বলতে হবে।
জুলাই গণঅভ্যুত্থানে নারায়ণগঞ্জ জেলার শিক্ষার্থীদের ভূমিকার কথা স্মরণ করে তিনি শহীদ ও আহতদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান।
এ সময় আরও বক্তব্য রাখেন জাতীয় নাগরিক পার্টির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্থা শারমিন, যুগ্ম সদস্য সচিব আব্দুল্লাহ আল আমিন, দক্ষিণাঞ্চলের সংগঠক শওকত আলী, সদস্য আহমেদুর রহমান তনু।
এনসিপি’র এ ইফতার আয়োজনে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, গণসংহতি আন্দোলন, গণঅধিকার পরিষদসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক ও নাগরিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
এনসিপি’র এ ইফতার আয়োজনে উপস্থিত ছিলেন, মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব এ্যাড, আবু আল ইউসুফ খান টিপু, গণসংহতি আন্দোলনের জেলা সমন্বয়কারী তরিকুল সুজন, ইসলামী আন্দোলনের মহানগর সভাপতি মুফতি মাসুম বিল্লাহ, সাধারণ সম্পাদক সুলতান মাহমুদ, খেলাফত মজলিসের মহানগরের সাধারণ সম্পাদক ইলিয়াস আহমদ, জামায়াতে ইসলামীর ঢাকা দক্ষিণের শিল্প বাণিজ্য বিষয়ক সম্পাদক গোলাম সারোয়ার সাঈদ, জাতীয় নাগরিক কমিটির সদস্য কবি আরিফ বুলবুল, গণঅধিকার পরিষদের জেলা সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার নাহিদ, নিতাইগঞ্জ ব্যবসায়ী মালিক সমিতির সভাপতি শংকর সাহা, হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান কল্যাণ ট্রাস্টের ট্রাস্টি জয় কে রায় চৌধুরী, জেলা ছাত্রদলের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক আজিজুল ইসলাম রাজীব, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জেলা আহ্বায়ক নিরব রায়হান, মহানগরের আহ্বায়ক মাহফুজ খান, ছাত্র শিবিরের মহানগরের সাধারণ সম্পাদক অমিত হাসান সহ প্রমুখ।