নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সভাপতি ওসাবেক এমপি মুহাম্মদ গিয়াসউদ্দিনকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য মামুনমাহমুদের মন্তব্যকে ‘বালখিল্য’ উল্লেখ করে মন্তব্য করেছেন জেলা কৃষক দলের সদস্য সচিবমুহাম্মদ কায়সার রিফাত।
সোমবার (২ ডিসেম্বর) গণমাধ্যমেপাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে তিনি ওই মন্তব্য করেন তিনি। মুহাম্মদ কায়সার রিফাত বাংলাদেশজাতীয়তাবাদী কৃষক দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য এবং জেলা বিএনপির সভাপতি, সাবেক এমপিমুহাম্মদ গিয়াসউদ্দিনের তৃতীয় ছেলে।সম্প্রতি ফতুল্লা ইউনিয়ন বিএনপিআয়োজিত সমাবেশে গিয়াসউদ্দিন তার বক্তব্যে ‘নরঘাতক নূর হোসেনের সঙ্গে কোনো ব্যক্তিকারাগারে দেখা করে এসেছেন এবং সেই ব্যক্তি নূর হোসেন ও গডফাদার শামীম ওসমানের হয়েবিএনপির কতিপয় নেতাকর্মীদের নিয়ে সভা-মিছিল করে তাদেরকে বিপদগামী করছেন। এসব কিছুরতথ্য প্রমাণ আমাদের কাছে আছে’ উল্লেখ করেন। এদিকে গিয়াসউদ্দিনের ওই বক্তব্যে কারোনাম উল্লেখ না করলেও তা নিজের কাঁধে তুলে নেন জেলা বিএনপির সাবেক সেক্রেটারি মামুনমাহমুদ। এবং ওই বক্তব্যের পাল্টা চ্যালেঞ্জ জানিয়ে নূর হোসেনের সঙ্গে তার দেখা করার তথ্যপ্রমাণ প্রকাশ করতে বলেন একই সঙ্গে মামুন মাহমুদ দাবি করেছেন গিয়াসউদ্দিন শামীম ওসমানেরপক্ষে ভোট চেয়েছেন।মামুন মাহমুদের অমন বক্তব্য, চ্যালেঞ্জজানানো কোনোভাবেই বোধগম্য নয় দাবি করে মুহাম্মদ কায়সার রিফাত বিজ্ঞপ্তিতে বলেন, “ফতুল্লাইউনিয়ন বিএনপি আয়োজিত সমাবেশে আমার পিতার একটি বক্তব্যে তিনি দারুণভাবে ব্যাথিতহয়েছেন। যদিও সেই বক্তব্যের কোনো অংশে তার নাম উচ্চারিত হয়নি, তারপরও তিনি ধরেইনিয়েছেন, নূর হোসেনকে কেন্দ্র করে দেওয়া বক্তব্যটুকু তাকে ঘিরে! বিষয়টি অত্যন্ত হাস্যকরএবং ‘ঠাকুর ঘরে কে রে, আমি কলা খাই না’- বহুল প্রচলিত এই প্রবাদটির মত। তাহলে কীতিনিই সে ব্যক্তি যিনি নরঘাতক নূর হোসেনের সঙ্গে কারাগারে দেখা করে এসেছেন। যদি তানা-ই হবে তাহলে কেন তিনি ওই বক্তব্য নিজের গায়ে মেখে নিলেন?”রিফাত বলেন, “বিগত ষোল বছর পতিতস্বৈরাচার সরকারের অন্যতম দোসর নারায়ণগঞ্জের গডফাদার শামীম ওসমানের সর্বোচ্চপ্রতিহিংসার শিকার হয়েছিলেন আমার পিতাসহ আমরা। কী পরিমাণ মামলা-মোকাদ্দমা, হয়রানি,নির্যাতনের শিকার হয়েছিলাম তা গোটা নারায়ণগঞ্জবাসী অবগত। এত নির্যাতনের পরও কখনইগোপন ঘরে, রাতের অন্ধকারে গডফাদার শামীম ওসমানের সঙ্গে গিয়াসউদ্দিন সাহেব আঁতাত কনেনিএবং বিদেশও পালিয়ে যাননি। এ কারণে যখন যেখানে সুযোগ হয়েছে সেখানেই গিয়াসউদ্দিনসাহেবকে নিয়ে অশালীন, কুরুচিপূর্ণ এবং হুমকিমূলক বক্তব্য দিতেন গডফাদার শামীম ওসমান। এইযখন পরিস্থিতি তখন স্বভাবতই প্রশ্ন আসে গডফাদার শামীম ওসমানের পক্ষে কী আমরা পিতা বাআমরা ভোট চাইতে পারি?”তিনি আরও বলেন, “যে মঞ্চে গডফাদারশামীম ওসমান গিয়াসউদ্দিন সাহেবকে নানাভাবে হুমকি দিতেন, তাকে নিয়ে বিদ্রুপ করতেন,একশো হাত মাটির তলা থেকে তুলে এনে পিটিয়ে মেরে ফেলার কথাও বলতেন, এক নিমিশে মাটিরসঙ্গে মিশিয়ে দিতে চাইতেন, সেই একই মঞ্চে মামুন মাহমুদের প্রশংসায় তিনি (শামীম ওসমান)থাকতেন পঞ্চমুখ- এর পিছনের কারণ অনুধাবন করতে হলে রকেট সাইন্স জানার প্রয়োজন নেই। ফলেশামীম ওসমানের পক্ষ হয়ে ‘গিয়াসউদ্দিন সাহেব ও তার সন্তানেরা ভোট চেয়েছে’ বলে যেবালখিল্য বক্তব্য তিনি দিয়েছেন তা ‘বাচ্চা ভুলানো লেবেনচুষ’ টাইপ।”রিফাত বলেন, “বাংলাদেশজাতীয়তাবাদী দল রণাঙ্গণের বীর মুক্তিযোদ্ধা মুহাম্মদ গিয়াসউদ্দিন সাহেবের প্রতি যে আস্থা ওবিশ্বাস রেখে জেলা বিএনপির দায়িত্ব অপর্ণ করেছে তা যথাযথভাবে তিনি পালনের চেষ্টা করেযাচ্ছেন। দল যদি কখনও মনে করে এই পদের জন্য তিনি যথাযথ নন; পরবর্তীতে যিনি আসবেন, দলযাকে এই দায়িত্ব দিবে, দলের বৃহত্তম স্বার্থে তার সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে আমরা কাজ করেযাবো।” তিনি আরও বলেন, “জনাব তারেকরহমান প্রদত্ত বর্তমান জেলা বিএনপি। ফলে এই কমিটি অস্বীকার করা এবং এই কমিটির বিরোধীতাকরে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করা মানেই দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের আদেশ, নির্দেশ অমান্য করা যাদলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের সামিল। ফলে দলের নীতি আদর্শে যারা বিশ্বাসী তারা বিশৃঙ্খলার পথপরিহার করে মূল ধারায় ফিরে আসবেন বলে প্রত্যাশা করি।”রিফাত বলেন, “মনে রাখা ভালো,বিএনপি দেশের একটি বৃহত্তম দল। এই দলে নেতৃত্বের প্রতিযোগিতা থাকা স্বাভাবিক কিন্তুপ্রতিহিংসা পরায়ণ হয়ে কেউ যদি বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা করে তাহলে তাদের রাজনীতি দল এবংসাধারণ মানুষের স্বার্থে নয়, ব্যক্তি স্বার্থে।”