নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে একই পরিবারের তিন সদস্যকে হত্যার ঘটনায় গ্রেপ্তারকৃত স্বামী মো. ইয়াসিন (২৪) কে পাঁচ দিনের রিমান্ডে পেয়েছে পুলিশ। শনিবার (১২ এপ্রিল) বিকেলে নারায়ণগঞ্জের জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম বেলায়েত হোসেনের আদালত এই আদেশ দেন।
আদালত পুলিশের পরিদর্শক কাইউম খান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, ত্রিপল হত্যাকাণ্ডে জড়িত সন্দেহে ইয়াসিনকে ১০ দিনের রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করেছিল সিদ্ধিরগঞ্জ থানা পুলিশ। তবে আদালত শুনানি শেষে পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
ইয়াসিন পেশায় ব্যাটারিচালিত রিকশাচালক। তার বাড়ি সিদ্ধিরগঞ্জের মিজমিজি দক্ষিণপাড়া এলাকায়। গত শুক্রবার (১১ এপ্রিল) দুপুরে মিজমিজি পশ্চিমপাড়ার একটি বাড়ির সামনে রাস্তার পাশে ময়লার স্তূপ থেকে তার স্ত্রী লামিয়া আক্তার (২২), চার বছরের ছেলে রাফসান লাবিব ও স্ত্রীর বড় বোন স্বপ্না আক্তারের বস্তাবন্দি মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
হত্যাকাণ্ডের পরপরই লামিয়ার স্বামী ইয়াসিনকে আটক করা হয়। রাতে নিহত লামিয়ার মেজো বোন মুনমুন আক্তার থানায় গিয়ে মামলা দায়ের করেন। এ মামলায় ইয়াসিন ছাড়াও তার বাবা মো. দুলাল (৫০) ও বোন মোসা. শিমুকে (২৭) আসামি করা হয়েছে।
মামলায় মুনমুন উল্লেখ করেন, লামিয়া একটি পোশাক কারখানায় কাজ করতেন এবং পাঁচ বছর আগে ইয়াসিনের সঙ্গে তার বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকেই ইয়াসিন নিয়মিত কাজ করতেন না এবং সংসারের খরচের জন্য লামিয়াকে নির্যাতন করতেন। মাদকাসক্ত ইয়াসিন প্রায়ই স্ত্রীকে হত্যার হুমকি দিতেন বলেও অভিযোগ রয়েছে।
মুনমুন দাবি করেন, ইয়াসিন তার বাবা ও বোনের সহায়তায় পূর্বপরিকল্পিতভাবে দুই বোন ও ভাগ্নেকে হত্যা করেন। পরে মরদেহগুলো গুম করতে আবর্জনার স্তূপে ফেলে রাখেন।
সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহীনূর আলম বলেন, “মামলার তদন্ত চলছে। প্রাথমিকভাবে পারিবারিক কলহের জেরে এই হত্যাকাণ্ড ঘটেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদের মাধ্যমে হত্যার পেছনের কারণ ও অন্যান্য জড়িতদের বিষয়ে বিস্তারিত জানার চেষ্টা করা হবে।”
ঘটনার আগে ৭ এপ্রিল দুপুরে মুনমুন তার বোনদের সঙ্গে শেষবারের মতো কথা বলেছিলেন। এরপর থেকে তাদের ফোন বন্ধ থাকায় উদ্বেগ তৈরি হয়।