বাংলাদেশের বিচার ব্যবস্থা ও রাজনৈতিক বৈষম্য নিয়ে কড়া সমালোচনা করেছেন ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশ সরকারি তোলারাম কলেজ (সতক) শাখা সভাপতি শাহ্ মুহাম্মদ ছগির হোসেন।
তিনি দাবি করেন, দেশের বিচারব্যবস্থা ক্ষমতার কাছে নতজানু হয়ে পড়েছে, ফলে অপরাধীরা বিচার পাচ্ছে না, বরং ক্ষমতাসীনদের বিরোধীদের দমন করা হচ্ছে।
তিনি বলেন প্রিয় জন্মভূমি বাংলাদেশ , দেশের সকল অন্যায়ের বিরুদ্ধে বিভিন্ন আন্দোলনে রক্ত দিয়েছি , শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে চেয়েছি আমরা সর্বস্তরের মানুষ। কিন্তু বারবার দেশের ন্যায় বিচারের অন্তরালে দেখেছি ক্ষমতা। ক্ষমতায় যেই আসে তার কোনো অপকর্মের বিরুদ্ধে সাংবাদিক, পুলিশ, বিচারপতি সহ কোনো প্রশাসন অবস্থান নেয় না। মনে হয় সবাই ক্ষমতাধরদের পা চাটা গোলাম বা ভয়ে ভীত।
৫ই আগস্টের আগে যখন স্বৈরাচার ক্ষমতায় ছিল তাদের বিরুদ্ধে কোনো কলম উঠেনি, মামলা হয়নি মামলা হলেও বিচার হয়নি বরং যারা ক্ষমতায় ছিল না তাদের বিরুদ্ধে ছিল সব। অন্যায় ভাবে ইসলামিক স্কলার ও বিভিন্ন নেতাদের মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে মুখ বন্ধ করে রেখেছে। আর এখন ক্ষমতা শেষ হওয়ায় সব মামলা নিউজ তাদের ঘিরে অথচ নব্য স্বৈরাচার রূপে যারা তান্ডব চালাচ্ছে বা যারা নতুন ভাবে ক্ষমতার দাপট দেখাচ্ছে, ইসলামিক স্কলার-নেতাদের মিথ্যা মামলার হুমকি দিচ্ছে অপমান করছে তাদের ছাড় দিচ্ছে। তারা আজ বুক ফুলিয়ে বিভিন্ন অন্যায় কাজে লিপ্ত হচ্ছে কিন্তু কোনো বিচার নেই। মনে হয় বিচারব্যবস্থার চোখ ক্ষমতার পর্দায় অন্ধ।
আবার দেখা যায় যারা জুলাই বিপ্লবের ভূমিকায় ছিল তাঁদের প্রাধান্য এমন ভাবে দেয়া হয়, যাতে মনে হয় সব কিছুই তাঁরা করেছেন এবং তাদের জন্য সকল সুযোগ-সুবিধা সুপারিশ হচ্ছে। অথচ এ বিপ্লব ছিল গণবিপ্লব।
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের ভূমিকার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, “আমাদের দল সবসময় অন্যায়ের বিরুদ্ধে সোচ্চার থেকেছে, জুলাই বিপ্লবের অন্যতম অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছে। ৫ই আগস্টের আগে পরে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে একমাত্র ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ নিজ পরিচয়ে সরাসরি আন্দোলন করেছিল এবং এর নেতাকর্মীরা আন্দোলনে ছিল ঢাল স্বরূপ কিন্তু আজ দলীয় ও মানবিক কাজে আমরা বাধাগ্রস্ত হচ্ছি, রাষ্ট্রীয় সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছি। এটা নতুন বৈষম্যেরই প্রমাণ।”
বিচারব্যবস্থার সংস্কার ছাড়া কোনো নির্বাচন অর্থবহ হবে না বলে সরকারকে সতর্ক করে তিনি বলেন, “ন্যায়বিচার নিশ্চিত করুন, বিচারব্যবস্থাকে স্বাধীন করুন, নয়তো নির্বাচন অর্থহীন হয়ে পড়বে। ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠাই শান্তি ও স্থিতিশীলতার একমাত্র উপায়।”
তিনি সরকারকে হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, “ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ও ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশ সহ এর অঙ্গসংগঠনগুলো এক একটি আদর্শিক সংগঠন। এর কোনো নেতাকর্মীকে মিথ্যা মামলায় হয়রানি করা হলে, তার যথাযথ বিচার হতে হবে। আমরা নতুন কোনো বৈষম্য চাই না।” অপরাধী দলীয়, বিরোধীদলীয় কিংবা প্রশাসনিক ব্যক্তি, মিথ্যা মামলা দায়েরকারী(ক্ষমতাধর) যেই হোক না কেন তার অপরাধের জন্য ন্যায় বিচারের মাধ্যমে নির্ধারিত শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ বরাবরই ন্যায়বিচারের দাবিতে অন্যায়ের বিরুদ্ধে সোচ্চার থেকেছে। তবে সরকারের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে এখনো কোনো আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানানো হয়নি।