পতিত স্বৈরাচারে সময় বুরুন্দী গ্রামের আওয়ামী লীগের নেতারা উপজেলার সরকারি পোর্টাল লেনদেনের মাধ্যমে মসজিদের জমিকে ঈদগাহ হিসেবে তালিকাভুক্ত করে।
জানা যায়, দীর্ঘ ৩০ বছর আগে বুরুন্দী দক্ষিণ পাড়া মসজিদ এবং মাদরাসার নামে জমি ওয়াকফাহ করেন মরহুম হাজি বাদশাহ। সে সময় জমিটি নিচু থাকায় তা ভরাট করতে বিভিন্ন এলাকার মানুষের কাছ থেকে দান গ্রহণ করেন বুরুন্দী দক্ষিণ পাড়া মসজিদ কমিটি। গত কয়েক বছর আগে মসজিদের জমি ভরাটে দান করা একটা পক্ষ দাবি করেন এই জমির অংশ তাদেরও দিতে হবে।
নিয়ম অনুযায়ী মসজিদের জমি কেবল মসজিদের কাজে ব্যবহার করা যাবে। এই জমি বিক্রি করলে তা মসজিদের তাহবিলেই রাখতে হবে। ওয়াকফাকৃত জমি অন্য কোথাও হস্তান্তর করতে হইলে মন্ত্রণালয়ের অনুমতি এবং যথাযথ নিয়ম মেনে করতে হবে। কিন্তু একটি পক্ষ জোরকরে কোনো প্রকার নিয়ম না মেনে মসজিদের জমিতে ঈদগাহ মাঠ করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।
প্রতি বছর ঈদের জামায়াত আদায় হয় এই মসজিদের মাঠে। এ বছর ঈদুল ফিতরের জামায়াত মসজিদের মাঠে আদায় করতে গেলে সাবেক আওয়ামিলীগ নেতাদের সঙ্গে মিলে কথিত বিএনপি-জামায়াতের হাইব্রিড নেতারা বাঁধা দেন নামাজ আদায়ে। জমি দকলের উদ্দেশে একটি পক্ষ পেশি শক্তি প্রদর্শন করেন পুরো গ্রামে। ঈদের জামায়াত যেন মসজিদ মাঠে আদায় করা না হয় তার জন্য হুমকি দেওয়া হয় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে।
প্রশাসনের মধ্যস্থতায় পরে মহল্লার তিন মসজিদে আলাদা অনুষ্ঠিত হয় ঈদ জামাত।
মসজিদের জমি নিজেদের কব্জা লয় নিতে ঈদের পরদিন থানায় অভিযোগ করেছে দানকারীরা।
নাম গোপন রাখার শর্তে বুরুন্দী গ্রামের একজন জানান, সময় পরিবর্তন হয়েছে। আমরা যখন দান উত্তোলন করি বিভিন্ন এলাকা থেকে তখন বলেছিলাম এখানে আমরা ঈদের জামায়াত এক সঙ্গে আদায় করব। তাই হচ্ছিল এটা ঈদগাহ হবে বা এই জমি ঈদগাহের নামে দেওয়া হবে সে বিষয়ে কিছুই বলা হয়নি। এতো বছর পর এসে তারা নতুন দাবি করছে। আগে আওয়ামী লীগের লোকজন এলাকা চালালেও তারা মসজিদের জমি এভাবে দখল করতে চায়নি। বর্তমানে যা হচ্ছে তা মসজিদের জমি দখলের ষড়যন্ত্র। কেউ মসজিদের জমির পক্ষে কথা বলতে গেলো উলটো তার নামে মামলার হুমকি দেওয়া হচ্ছে। নানাভাবে হুমকি দেওয়া হচ্ছে।
বুরুন্দী গ্রামের স্থানীয়রা জানান, যখন মাদরাসাও মসজিদের নামে হাজি বাদশাহ জমি দান করেন তখন সব এলাকা থাকেই দান গ্রহণ করা হয়। কোনো একক গ্রাম থেকে দান গ্রহণ করা হয়নি। উত্তর পাড়া থেকে যারা দান করেছিলেন তারা ব্যক্তিগতভাবে দান করেন। সামাজিকভাবে নয়। কিন্তু দুঃখজনকভাবে দেখা যায় সম্প্রতি গত কয়েকবছর যাবত বুরুন্দী উত্তর পাড়ার লোকজন দাবি করে আসছেন এই জমিতে তাদেরও অংশ রয়েছে। তাদের দাবি তারা দান করেছে ঈদগাহ হবে এটা ভেবে। একই সঙ্গে তারা দাবি করছেন মসজিদের জমিকে ঈদগাহ ঘোষণা দিয়ে কমিটি করে দিতে। যা ওয়াকফা আইনে নিষিদ্ধ।