সোমবার (১৮ই নভেম্বর) বেলা সাড়ে ১১টায় নারায়ণগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ মমিনুল ইসলামের আদালতে তাকে হাজির করা হয়। পুলিশের কঠোর নিরাপত্তার মধ্যে দিয়ে নারায়ণগঞ্জ কারাগার থেকে আদালতে আনা হয় জাকির খানকে। এসময় সাব্বির হত্যা মামলায় আদালতে সাক্ষ্য প্রদান করেন ৯ নম্বর তম্দন্ত কর্মকর্তা মোঃ নুরুল আফছার।
নারায়ণগঞ্জ কোর্ট পুলিশ পরিদর্শক (অফিসার ইনচার্জ) আব্দুল কাইয়ুম সাংবাদিকদের এ তথ্যটি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, সাব্বির আলম খন্দকার হত্যা মামলায় আদালতের নির্ধারিত তারিখ পর্যন্ত প্রতিদিন সাক্ষ্যগ্রহণ করা হবে। সাক্ষ্য গ্রহণের সময় আসামি জাকির খান উপস্থিত হবেন। সাক্ষ্যগ্রহণের পর তাকে কারাগারে প্রেরণ করা হবে।
নারায়ণগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ আদালতের রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি এ্যাড. আবুল কালাম আজাদ জাকির সংবাদিকদের জানান, ১০ জন তদন্তকারী কর্মকর্তা মধ্যে ৯ নম্বর তদন্তকারী কর্মকর্তা মোঃ নুরুল আফছার আদালতে সাক্ষ্য দিয়েছেন। উনি দুটি পত্রিকার রিপোর্ট সহ কিছু কাগজপত্র জমা দিয়েছেন। এছাড়া ১৬১ ধারায় ৯ জন সাক্ষীর জবানবন্দি নিয়েছিলেন তিনি।
এদিকে আসামি পক্ষ উচ্চ আদালতে জামিনের আবেদন করলে ৬ মাসের মধ্যে আদালত মামলাটি নিষ্পত্তি করার নির্দেশ দেন। সেই ৬ মাসের মেয়াদ আগামী ২৫ নভেম্বর শেষ হবে। ফলে এই সময়ের মধ্যে মামলাটি নিষ্পত্তি করার চেষ্টা করবেন বলে আদালতের বিচারক জানিয়েছেন। সে হিসেবে আগামীকাল থেকে প্রতিদিন এই মামলার তারিখ হবে, প্রতিদিন মামলার সাক্ষ্য গ্রহণ করা হবে।
আসামিপক্ষের আইনজীবী মোঃ রবিউল হোসেন জানান, তদন্তকারী কর্মকর্তা নুরুল আফছার শুধুমাত্র কিছু কাগজপত্র জব্দ সহ পত্রিকার রিপোর্টের কাটিং দেখিয়েছে। হত্যাকাণ্ডের ঘটনার সময় জাকির খান দেশের বাইরে ছিল বলে তিনি আদালতে জানিয়েছেন। এই মামলার সাথে যেসব কাগজপত্রের সম্পৃক্ততা নেই সেসব তিনি দেখিয়েছেন। এছাড়া উনার সাক্ষীও যথাযথ হয়নি। তিনি ছাড়া এই মামলায় এখন পর্যন্ত ১৮ জন সাক্ষ্য দিয়েছেন, তারা কেউ জাকির খানের বিরুদ্ধে কোন তথ্য দেয়নি। আগামীকাল থেকে ২৬ নভেম্বর পর্যন্ত এই মামলার কার্যক্রম প্রতিদিন চলবে। আপনারা এরকম মামলা কবে দেখেছেন যে মামলার কার্যক্রম প্রতিদিন চলে। এটা একটা চাঞ্চল্যকর হত্যা মামলা হলেও এর সাথে আসামি জাকির খান কোনভাবে সম্পৃক্ত নয়। তার সম্পৃক্ততা না থাকার কারণে আদালত এই মামলা ৬ মাসের মধ্যে শেষ করার নির্দেশনা দিয়েছেন। সেই সময় শেষ হবে আগামী ২৫ নভেম্বর। অর্থাৎ আগামী ২৬ নভেম্বরের মধ্যে মামলাটি নিষ্পত্তি হবে বলে আমরা আশা করছি।
স্বাক্ষ্রগ্রহণ শেষে জাকির খানের আইনজীবী ও নারায়ণগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাড, সরকার হুমায়ুন কবির সাংবাদিকদের জানান, আমরা এ মাসেই জাকির খানকে বের করবো ইনশাআল্লাহ ।
জাকির খান খালাস পেয়ে নির্দোষ হয়ে বের হবেন। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা স্বীকার করেছেন তিনি মামলার সঠিক তদন্ত করে আনতে পারেননি। আসামি সেসময় দেশের বাইরে ছিল এটাতো তিনি বলেছেন। তদন্তের সময়ও তিনি বাইরে ছিলেন। এ মামলায় আমাদের কিছু হবে না। যিনি এ মামলা করেছেন তিনি উদ্দেশ্য প্রনোদিত হয়ে প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করার জন্য এ মামলা করেছেন এটাও প্রমান হয়ে গেছে। এসময় আদালত চত্বরে উপস্থিত ছিলেন জেলা বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক মোঃ রবিউল ইসলাম রবি, মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক মোঃ মনির হোসেন খান,এ্যাড,রাজিব দাস,এ্যাড, বিল্লাল হোসেন, এ্যাড,খোরশেদ মোল্লা, সাবেক বিএনপির নেতা মোঃ আওলাদ হোসেন, জাকির খান মুক্তি পরিষদের আহ্বায়ক সলিমুল্লা করিম সেলিম, সদর থানা বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ লিংকন খান, কাঞ্চন আহমেদ, জিয়াউর রহমান জিয়া, পারভেজ মল্লিক, সহ প্রমূখ।