বাংলাদেশ জতীয়তাবাদী দলের চেয়ারপার্সন, আপোষহীন নেত্রী ও তিবারের নির্বাচিত সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তির দাবীতে বিশাল সমাবেশের আয়োজন করে নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগর বিএনপি। সোমবার (১ জুলাই) বিকেল সাড়ে ৩টায় নারায়ণগঞ্জ নগরীর কেন্দ্রীয় শহিদ মিনার প্রাঙ্গণে ঐ সমাবেশের আয়োজন করা হয়।
নারায়নগন্জ মহানগর বিএনপি’র আহবায়ক এ্যাড. সাখাওয়াত হোসেন খানের সভাপতিত্বে ও জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক গোলাম ফারুক খোকন এবং মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব এ্যাড. আবু আল ইউসুফ খান টিপুর সঞ্চালনায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএনপি’র স্থায়ী কমিটির সদস্য বাবু গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, প্রধান বক্তা হিসেবে ছিলেন বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য ও জেলা বিএনপির সভাপতি বীরমুক্তিযোদ্ধা মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন, বিশেষ অতিথি হিসেবে ছিলেন বিএনপির ঢাকা বিভাগীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক বেনজির আহমেদ টিটো ও নজরুল ইসলাম আজাদ।
এছাড়াও আরও উপস্হিত ছিলেন কেন্দ্রীয় বিএনপির সহ অর্থনৈতিক বিষয়ক সম্পাদক মাহমুদুর রহমান সুমন, বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য কাজী মনিরুজ্জামন মনির, মোস্তাফিজুর রহমান ভূঁইয়া দিপু, আব্দুল মান্নান প্রমুখ।
এসয় প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাবু গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, জনগণের ভোটের অধিকার, নাগরিক অধিকার, বেচেঁ থাকার অধিকার সহ সকল অধিকার থেকে বঞ্চিত করে স্বাধীন দেশে পরাধীন নাগরিক হিসেবে বসবাস করছি আমরা।
আমরা কিছু বল্লেই,ওবায়দুল কাদের লাফ দিয়া উঠে। তারা বলে ‘বিএনপি আওয়ামী লীগকে ভারতের সেবা দেশ বানানো চেষ্টা করছে’। এখনো সেটা হওয়া বাকি আছে? আজকে ওবায়দুল কাদের বলেছে, খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবি নাকি দৃষ্টতা। অথচ খালেদা জিয়াকে জেলে রাখা যে কতটা অন্যায়, কতটা অবিচার; সময় আসলে বাবাধন টের পাইবা। খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে একটা মামলাও সঠিক না। এটা প্রতিবেশীদের খুশি করার জন্য। খালেদা জিয়ার অপরাধ, তিনি দেশবিরোধী চুক্তি করতে নারাজ, তিনি দেশের স্বার্থ বিকিয়ে দিতে রাজি নন। খালেদা জিয়া বলেছে আমাদের প্রতিবেশী দেশে আমাদের বন্ধু আছে, প্রভু নাই। আমরা প্রতিবেশী দেশের সাথে বন্ধুত্ব করতে চাই, কিন্তু তারা তো আমাদের সাথে বন্ধুত্ব করতে চায়না। তারা প্রভুত্ব করতে চায়। ভারতের সাথে বাংলাদেশের স্বামী স্ত্রীর সম্পর্ক,যেই দেশ বড় তারাই স্বামী। বন্ধুত্ব আর স্বামী স্ত্রীর সম্পর্ক তো এক না। আওয়ামী বলে চায়নাও নাকি আমাদের বন্ধু। যেভানে স্বামী স্ত্রীর সম্পর্ক আছে সেখানে চায়নার সাথে কি পরকিয়া।
তিনি বলেন, এই দেশে চোর, ডাকাত, পাচারকারী আর লুটপাটকারী সকলের আড়তদার। তাদের বিচার চেয়ে তো লাভ নাই। দুর্নীতি ছাড়া যাদের কোনো নীতি নাই, অথচ সরকার বলে, দুর্নীতিতে কোনো আপোষ নাই। কিন্তু দুর্নীতি ছাড়া তাদের কোন নীতিই নেই। জিনিসপত্রের দাম বাড়ছে, বেকারত্ব বাড়ছে, নতুন কর্মসংস্থান নাই। আমদানি-রপ্তানি নিন্মগতি কিন্তু বিশাল একটা বাজেট করছেন। বাজেট আর প্রকল্প মানেই হচ্ছে চুরি। উন্নয়ন তো কোন দয়া না, কোন খয়রাত না। উন্নয়ন জনগনের অধিকার কারণ জনগণের টাকায় হয়। সেই উন্নয়নের নামে তারা টাকা লুটপাট করে খায়।
স্বাস্থ্যখাত প্রসঙ্গে তিনি বলেন, স্বাস্থ্যখাতের অবস্থা তো করোনার সময়ের চেয়েও খারাপ। যেদিকে তাকাবেন সব খাতেই চুরি আর ডাকাতি। শেখ হাসিনা এখন জনগণের নেত্রী না, তার জনগণ দরকার নাই।
বিএনপি এই নেতা বলেন, মোদি থাকলেই উনি (শেখ হাসিনা) এই দেশে থাকতে পারবে। আমাদের বাংলাদেশের উপর দিয়ে ট্রেন যাবে আর আমরা কিছু বলতে পারবো না। এটা কার স্বার্থে করা হচ্ছে? ভারতের স্বার্থে। আমরা ভারত হয়ে নেপাল যাবো সেটার ট্রানজিট পাচ্ছি না। এটা হওয়ার পর কিছু আছে ঢিলা মারবো তারপর ইন্ডিয়া বলবো আমাদের নিরাপত্ত্বার অভাব। ভারতের আর্মি এখানে আইন্না বসায় দিবো, আর আমাদের আর্মি ঘরে বসে চিনা বাদাম খাবে।
তিনি বলেন, স্বাধীন দেশে মানুষকে মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত করে রেখেছে। প্রতিবেশী দেশের সাথে স্বার্থবিরোধী কোন চুক্তি নিয়ে কিছু বললেই আমাদের বলে আমরা নাকি ভারত-বিদ্বেষী। একটা চক্রান্ত চলছে। আওয়ামী লীগকে ভারতের সেবাদাস বানানোর চক্রান্ত চলছে।
ভারতকে করিডোর দেওয়ার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমাদের দেশ স্বাধীন করতে লক্ষ মানুষ প্রাণ দিয়েছে। আমরা পাকিস্তানের অত্যাচার ও অর্থনৈতিক বিষম্য মানতে পারলাম না কিন্তু এখন আমরা দিল্লীর গোলামি করি। এই আওয়ামী লীগ সরকারকে বিদায় দিতে না পারলে বাংলাদেশ নামে দেশটির নাম মানচিত্রে থাকবে না। ভারতের পরিকল্পনা অনেক বড়। তারা সেই ৬ হাজার বছরের পুরনো মহাভারতে ফিরে যেতে চায়। ভারত অন্য কোন দেশের অস্তিত শিকার করতে চায় না।
গয়েশ্বর বলেন, আমাদের পথে চলা বন্ধ হবে সেদিন, যেদিন শেখ হাসিনাকে গণভবন থেকে টুঙ্গিপাড়ায় পাঠাতে পারবো।
সমাবেশে বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য ও জেলা বিএনপির সভাপতি বীরমুক্তিযোদ্ধা মুঃ গিয়াস উদ্দিন বলেন, আজ সমগ্র জাতি লজ্জিত। যে নেত্রীর নেতৃত্বে বাংলাদেশ সৃষ্টি হয়েছে। গণতান্ত্রিক আন্দোলন, দেশের উন্নয়ন ও অগ্রগতিতে যার ভূমিকা রয়েছে অপরিসীম, তিন তিন বারের প্রধান মন্ত্রী বিএনপির চেয়ারম্যান পার্সন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির জন্য আন্দোলন করতে হয়।
তিনি বলেন, আমরা কেন বা আন্দোলন করবো নেত্রীর জন্য, যার মুক্তিযুদ্ধে অবদান অবিস্মরণীয় হয়ে রয়েছে। যে নেত্রীর স্বামী দেশের স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছেন। নিজে যুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করেছেন। দেশের শাসনভার হাতে নিয়ে সারা বিশ্বের কাছে বাংলাদেশকে উন্নত রাষ্ট্র হিসেবে পরিচিত করেছেন। তাকে আজকে অন্যায় ভাবে শাস্তি দিয়ে কারাগারে রাখা হয়েছে। অসুস্থ্য অবস্থায় তাকে মুক্তি দেওয়া হয় না, এটা জাতির জন্য দুর্ভাগ্য।
সমাবেশে আরও উপস্থিত ছিলেন মহানগর বিএনপি’র রুগ্ন আহবায়ক এ্যাড,হুমায়ুন কবির সরকার,মোঃ মনির হোসেন খান, ফতেহ মোহাম্মদ রেজা রিপন, সদর থানা বিএনপি’র সভাপতি মোঃ মাসুদুর রহমান মাসুদ,সাধারণ সম্পাদক এ্যাড, আনোয়ার হোসেন প্রধান, মহানগর বিএনপি,র সদস্য ডাঃ মজিবুর রহমান, এ্যাড,রফিকুল ইসলাম, ফতুল্লা থানা বিএনপি’র সভাপতি এ্যাড,বাড়ী ভুইয়া, বন্দর থানা বিএনপি,র সভাপতি শাহেন শাহ,মহানগর যুবদলের আহবায়ক মনিরুল ইসলাম সজল, সাধারণ সম্পাদ মোঃ সাহেদ,সেচ্ছাসেবক দলের আহবায়ক সাখাওয়াত হোসেন রানা, মীর্জা জনি,মোঃ দুলাল হোসেন, শ্রমিকদলের আহবায়ক এসে এম আসলাম, জেলার আহবায়ক রহিমা শরিফ মায়া, মহানগরের আহবায়ক দিলারা মাসুদ ময়না, একে এম মাজহারুল ইসলাম জোসেফ সহ বিভিন্ন থানা, উপজেলা,ওয়ার্ডের অঙ্গসংগঠনের নেতৃবৃন্দ।