বিশিষ্ট সাংবাদিক ও সংগঠক ফররুখ আহমাদ খসরু বলেছেন, আপনারা জানেন দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দেশে একটি সংকট তৈরি হয়েছে। ক্ষমতাসীন পক্ষ যেন তেন ভাবে একটি নির্বাচন করে ক্ষমতায় থেকে যেতে চায়। একই ভাবে বিরোধী পক্ষ তত্বাবধায়ক সরকারের মাধ্যমে ক্ষমতায় যেতে চায়। এই দুই পক্ষের সংঘাত এর কারনে দেশ একটি সংকটময় সময় অতিক্রম করছে। ক্ষমতাসীন এবং ক্ষমতাহীন এই দুই দলের সংঘাতের কারনে জনজীবন আজ অতীষ্ঠ। আমরা নারায়ণগঞ্জ সুজনের পক্ষ থেকে বলতে চাই এই অপরাজনীতি থেকে আমরা মুক্তি চাই।
প্রিয় নারায়ণগঞ্জবাসী আমি আপনাদের পক্ষ থেকে দেশবাসীর কাছে ও সারা বিশ্ববাসীর কাছে ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি, কারন আপনারা জানেন এই নারায়ণগঞ্জ থেকেই সংঘাত এর রাজনীতি, এই খেলা হবার মতো একটি অশ্লীল স্লোগান শুরু হয়েছিল। এই খেলা হবে স্লোগান এর মধ্যে দিয়ে সারা বাংলাদেশে রাজনীতিতে এক সংকট তৈরি হয়েছে যার মাধ্যমে সংলাপ সমঝোতার পথ রুদ্ধ হয়ে গেছে। আমি আজ এখান থেকে বলতে চাই নারায়ণগঞ্জ -৪ আসনের সংসদ সদস্য এ কে এম শামীম ওসমানকে আপনি আপনার এই খেলা হবে স্লোগান বন্ধ করুন। আপনি নারায়ণগঞ্জ বাসীর পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রীর সাথে কথা বলুন, যে আমরা আর কোনো খেলা হবে চাই না।
দেশে চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতা ও নির্বাচন নিয়ে দলগুলোর পাল্টাপাল্টি অবস্থান পরিহার করে সমঝোতায় দাবীতে সুজনের মানববন্ধনে তিনি এসব কথা বলেন।
শনিবার (৫ আগষ্ট) বেলা ১১টার দিকে নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবের সামনে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
এ সময় ফররুখ আহমাদ খসরু আরও বলেন, এখন থেকে সম্প্রীতি হবে, এখন থেকে সমঝোতা হবে, আপনারা একটা পক্ষ ক্ষমতায় থাকতে চান। আরেক পক্ষ ক্ষমতায় যেতে চায়। আপনারা জন সমাবেশের নামে জনদুর্ভোগ সৃষ্টি করছেন। আর ক্ষমতাসীনপক্ষ আপনারা শান্তি সমাবেশের নামে সারা দেশব্যাপী অশান্তি সৃষ্টি করছেন। আমরা এই অশান্তি চাই না। মনে রাখবেন ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধে শান্তি বাহিনী ছিল। আজ আর সেই শান্তি বাহিনী নেই। সুতরাং এই শান্তি সমাবেশ বন্ধ করুন। এই জনসমাবেশের নামে জনদূর্ভোগ বন্ধ করুন। আপনারা সমঝোতায় আসুন, সংলাপে বসুন।
তিনি বলেন, জনগণ আপনাদের পক্ষে নাই। কারণ বিগত নির্বাচন গুলিতে আপনারা দেখেছেন ১১ শতাংশ ভোটারও উপস্থিতি হয়নি। আমরা জানি সে জায়গায় আপনারা কারচুপি করে ১১ শতাংশে পৌঁছেছেন। মূলত ৫ শতাংশ লোকও আপনাদের পক্ষে নাই। আমরা কোন দলের পক্ষে বলছি না। আমরা জনগণের পক্ষে দাঁড়িয়ে বলতে চাই আমরা আর খেলা হবে রাজনীতি চাই না। সমঝোতার রাজনীতি চাই। সংলাপের রাজনীতি চাই।
ফররুখ আহমাদ খসরু বলেন একটি অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনে কাউকে বাইরে রেখে নির্বাচন করার কোন সুযোগ নাই। খেলা কখনো একা একা হয় না। খেলোয়াড় প্রয়োজন হয়। আপনারা সব খেলোয়াড়রা মাঠে নামেন। আমরা যেন দর্শকপর্যায়ে থেকে সুষ্ঠুভাবে ভোট দিতে পারি। আমাদের ভোটের অধিকার আমাদের ভাতের অধিকার ফিরিয়ে দিন। আমরা আর টিসিবি ট্রাকের পিছনে পণ্যের জন্য লাইনে দাঁড়াতে চাই না। খাদ্যের জন্য চাই না আর হাহাকার। আমরা চাইনা ভোটকেন্দ্রে গিয়ে আমাদের ভোট না দিয়ে ফিরে আসতে।
তিনি বলেন, আমরা ভোটকেন্দ্রে গিয়ে আহত বা নিহত হয়ে ফিরতে চাই না। বাংলার কোন মায়ের বুক খালি হোক এটা আমরা আর চাই না। স্বাধীনতার ৫২ বছর পর কেন আমাদের ভোট ও ভাতের জন্য লড়াই করতে হবে। যে সোনার বাংলা গড়ার লক্ষে আমাদের পিতারা মুক্তিযুদ্ধের গিয়েছিলেন তারা অনেকে এখনো জীবিত আছেন । ৩০ লক্ষ শহীদ এবং ১০ লক্ষ মা বোনের ইজ্জতের বিনিময়ে পাওয়া এই দেশে আপনাদের এই অশ্লীল নোংরা অপরাজনীতি বন্ধ করতে হবে। এখন থেকে জনগণের মুক্তির জন্য কথা বলুন। আমি আবারো বলতে চাই নারায়ণগঞ্জ ৪ আসনের মাননীয় সংসদ সদস্য শামীম ভাই খেলা হবে রাজনীতি বন্ধ করুন। সমঝোতার পথে আসুন সংলাপের পথে আসুন।
অনুষ্ঠানে সুজনের সদস্য সাব্বির আল ফাহাদের সঞ্চালনায় সভাপতিত্ব করেন সুজনের জেলা সভাপতি ধীমান সাহা জুয়েল। অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন নাগরিক কমিটির সভাপতি এবি সিদ্দিক, বাসদ জেলার সদস্য সচিব আবু নাইম খান বিপ্লব, জেলা গণসংহতির সমন্বয়ক তরিকুল সুজন, নারী সংহতির নেত্রী পপি রানী সরকার, সাংস্কৃতিক জোটের সদস্য জহিরুল ইসলাম মিন্টু, ন্যাশনাল ইয়ুথ ফোরামের সদস্য জিল্লুর রহমান, সুজন জেলা কমিটির সদস্য মাকসুদা ইয়াসমিন, সোহাগ, আশরাফুল, রাজলক্ষী, জেলা ইয়ুথ ফোরামের যুগ্ম সমন্বয়ক রাকিবুল ইফতি।