নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার উপজেলায় বিশনন্দী ফেরিঘাট দিয়ে মেঘনা নদী পার হওয়ার সময় একটি অটোরিকশা ফেরি থেকে ছিটকে নদীতে পড়ে যায়। এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় শাশুড়ি ও পুত্রবধূর মৃত্যু হয়েছে। ঘটনার প্রায় ১৩ ঘণ্টা পর তাদের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
নিহতরা হলেন খালেদা বেগম (৫৫) ও তার পুত্রবধূ ফারজানা বেগম (২২)। তারা ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলার রসুল্লাবাদ গ্রামের বাসিন্দা। শনিবার (৭ জুন) ভোরে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও স্বজনদের সূত্রে জানা যায়, শনিবার ভোর পাঁচটার দিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর থেকে আসা অটোরিকশাটি বিশনন্দী-কড়িকান্দি রুটের ফেরিতে ওঠে। এ সময় অটোরিকশার চালক কুদ্দুছ ও ফারজানার স্বামী সাগর মিয়া গাড়ি থেকে নেমে পাশে দাঁড়িয়ে ছিলেন। কিন্তু অটোরিকশার ভেতরে বসা ছিলেন খালেদা বেগম, তার ছেলে কামাল হোসেন এবং পুত্রবধূ ফারজানা বেগম। ফেরি ছাড়ার পর সামান্য ঝাঁকুনিতে অটোরিকশাটি কাত হয়ে সরাসরি মেঘনা নদীতে পড়ে যায়।
দুর্ঘটনার জন্য ফেরি কর্তৃপক্ষের অব্যবস্থাপনাকে দায়ী করেছেন স্বজন ও স্থানীয়রা। তাদের অভিযোগ, ফেরিটির পেছনে যাত্রীদের নিরাপত্তার জন্য কোনো রেলিং বা সুরক্ষা বেষ্টনী ছিল না। দীর্ঘদিন ধরেই ঘাটটিতে চলাচলকারী ফেরিগুলো ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে বলে জানান তারা।
দুর্ঘটনার পরপরই স্থানীয়দের সহায়তায় খালেদা বেগমের ছেলে কামাল হোসেনকে (১৯) জীবিত উদ্ধার করা সম্ভব হয়। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশ উদ্ধার অভিযানে নামে। দীর্ঘ চেষ্টার পর বিকেলে অটোরিকশাসহ নিখোঁজ দুজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
বিকেলে আড়াইহাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খন্দকার নাসির উদ্দিন বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি জানান, “দুর্ঘটনাকবলিত অটোরিকশাটি উদ্ধার করা হয়েছে এবং এর ভেতর থেকে শাশুড়ি-পুত্রবধূর মরদেহ পাওয়া গেছে।”
এই ঘটনায় নিহতদের গ্রামের বাড়িতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। একটি পরিবারের আনন্দযাত্রা মুহূর্তেই বিষাদে পরিণত হওয়ায় এলাকায় চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে।