র্যাব-১১ সূত্রে জানা যায়, বিগত ২৫ জানুয়ারি ২০২০ তারিখ রাত আনুমানিক ৯টা ৪৫ মিনিটে আরএফএল কোম্পানির একটি কাভার্ড ভ্যান চট্টগ্রাম ডিপো থেকে নরসিংদীর ঘোড়াশালের দিকে যাচ্ছিল। পথে সোনারগাঁও থানাধীন ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের আষাঢ়িয়ারচর ব্রিজের পূর্ব পাশে চালক মোঃ হোসেন আলী প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে কাভার্ড ভ্যানটি থামালে চালক ও তার সহকারী (হেলপার) মোঃ সাগর গাড়ি থেকে নামেন। এসময় অজ্ঞাতনামা ৫/৬ জন ডাকাত চাকু ও ছুরিসহ তাদের ঘিরে ফেলে এবং সবকিছু দিয়ে দিতে বলে। তারা বাধা দিলে ডাকাতরা হেলপার সাগরের সঙ্গে ধস্তাধস্তিতে লিপ্ত হয় এবং একপর্যায়ে ধারালো অস্ত্র দিয়ে সাগরকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে রক্তাক্ত জখম করে। ডাকাতরা মালামাল ছিনিয়ে নিয়ে পালিয়ে যাওয়ার পরপরই হাইওয়ে টহল পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। কাভার্ড ভ্যানের চালক হোসেন আলীর সহায়তায় পুলিশ সাগরকে দ্রুত সোনারগাঁও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এ ঘটনায় নিহতের বড় ভাই মোঃ আসাদুল ইসলাম বাদী হয়ে সোনারগাঁও থানায় একটি খুনসহ ডাকাতি মামলা দায়ের করেন। দীর্ঘ বিচারিক প্রক্রিয়া শেষে গত ২৮ মে ২০২৫ তারিখে নারায়ণগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. আবু শামীম আজাদ এ মামলার রায় ঘোষণা করেন। রায়ে ডাকাতির সাথে জড়িত পলাতক আসামিদের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং প্রত্যেককে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও ২ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়। রায় ঘোষণার সময় আসামিরা আদালতে অনুপস্থিত ছিল।
রায় ঘোষণার পর থেকেই র্যাব-১১, নারায়ণগঞ্জ পলাতক আসামিদের গ্রেফতারে গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি করে। এরই ধারাবাহিকতায়, সুনির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতে সোমবার সন্ধ্যা ৬টা ৪০ মিনিটে র্যাব-১১, সিপিএসসি, আদমজীনগর, নারায়ণগঞ্জের একটি চৌকস আভিযানিক দল সোনারগাঁও থানাধীন কাঁচপুর এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামি মোঃ রাসেলকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। গ্রেফতারকৃত রাসেল ময়মনসিংহ জেলার গৌরীপুর থানার তাতরাকান্দা গ্রামের মজিবর তালুকদার ও জরিনা বেগম দম্পতির ছেলে। সে বর্তমানে সোনারগাঁও থানার কাঁচপুর সোনাপুর এলাকায় বসবাস করছিল।
গ্রেফতারকৃত আসামিকে পরবর্তী আইনানুগ কার্যক্রম সম্পন্ন করার জন্য নারায়ণগঞ্জ জেলার সোনারগাঁও থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে বলে র্যাব জানিয়েছে। এই ঘটনায় অন্যান্য পলাতক আসামিদের গ্রেফতারেও র্যাবের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।