নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় কুখ্যাত কিশোর গ্যাং ‘ডি কোম্পানি’র একটি আস্তানায় অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমাণ মাদক ও দেশীয় অস্ত্রসহ গ্রুপের দুই সক্রিয় সদস্যকে আটক করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব-১১)। মঙ্গলবার (২৮ মে ২০২৫) ভোরে ফতুল্লা থানার মাসদাইর এলাকার একটি ভাড়া বাসায় এই অভিযান চালানো হয়।
র্যাব-১১ এর সিপিসি-১ এর একটি চৌকস আভিযানিক দল গোপন সংবাদের ভিত্তিতে উক্ত বাসায় সারারাত ধরে অভিযান পরিচালনা করে। আটককৃতরা হলো: ১। বাপ্পী (২৯), পিতা- মৃত ইমরান, সাং-চরকাশিপুর এবং ২। মোঃ ইমরান (৩০), পিতা- মোঃ জাহাঙ্গীর হোসেন, সাং-পশ্চিম মাসদাইর। উভয়ের থানা ফতুল্লা, জেলা নারায়ণগঞ্জ।
অভিযানকালে ওই বাসা থেকে বিক্রয়ের উদ্দেশ্যে মজুদ রাখা ১৮ কেজি গাঁজা, ১০১ পুড়িয়া হেরোইন, ৪৭৯ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট এবং সন্ত্রাসী কার্যক্রম পরিচালনার জন্য রাখা দুটি ছুরি ও দুটি চাপাতি উদ্ধার করা হয়।
র্যাব জানায়, প্রাথমিক অনুসন্ধানে জানা গেছে, ‘ডি কোম্পানি’ নামক এই কিশোর গ্যাং গ্রুপটি সম্প্রতি ফতুল্লা এলাকায় চাঁদাবাজি, ছিনতাই, लूटপাটসহ বিভিন্ন অপকর্মের মাধ্যমে ত্রাস সৃষ্টি করে আসছিল। তারা অর্থের বিনিময়ে অন্যের হয়ে সহিংস কার্যক্রম পরিচালনা করত এবং নগরীর বিভিন্ন স্পটে মাদক সেবন ও কেনাবেচার সাথে সক্রিয়ভাবে জড়িত ছিল। তাদের অত্যাচারে এলাকাবাসীর জনজীবন অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছিল। এই সফল অভিযানে এলাকাবাসী সন্তোষ প্রকাশ করেছে।
র্যাব আরও জানায়, বর্তমান সময়ে কিশোর গ্যাং কালচার একটি ভয়াবহ সামাজিক ব্যাধিতে পরিণত হয়েছে। এই গ্যাং সদস্যরা এলাকায় নিজেদের আধিপত্য জাহির করতে উচ্চ শব্দে গান বাজানো, বেপরোয়া গতিতে মোটরসাইকেল চালানো, পথচারীদের উত্ত্যক্ত করা এবং সামান্য ঘটনাকে কেন্দ্র করে মারামারি এমনকি খুনের মতো ঘটনা ঘটাতেও দ্বিধাবোধ করে না।
কিশোর গ্যাংয়ের এই দৌরাত্ম্য দমনে র্যাব-১১ தொடர்ந்து অভিযান পরিচালনা করে আসছে। গত ০১ আগস্ট ২০২৪ থেকে অদ্যাবধি কিশোর গ্যাংয়ের লিডারসহ মোট ১৬ জনকে গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনা হয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায়, গত ২৩ মে ২০২৫ তারিখে সিদ্ধিরগঞ্জে কিশোর গ্যাংয়ের বিরোধে ছুরিকাঘাতে এক কিশোর নিহতের ঘটনায় ০২ জন এবং গত ২৭ মে ২০২৫ তারিখে সিদ্ধিরগঞ্জের হোসিয়ারী শ্রমিক ফারুক হত্যার সাথে জড়িত আরও ০৬ জন কিশোর গ্যাং সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়।
আটককৃত ‘ডি কোম্পানি’র সদস্যদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের প্রক্রিয়া চলছে এবং কিশোর গ্যাংয়ের বিপদগামী সদস্যদের আইনের আওতায় আনতে র্যাব-১১ এর অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে জানানো হয়েছে।