নারায়ণগঞ্জে হোসিয়ারি শ্রমিকদের দীর্ঘদিনের সাত দফা দাবির অবসান ঘটেছে। মালিক ও শ্রমিক পক্ষের মধ্যে ফলপ্রসূ আলোচনার মাধ্যমে একটি সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে, যার ফলে শ্রমিকদের মজুরি বৃদ্ধিসহ অন্যান্য দাবির সমাধান হলো। এই চুক্তি শিল্পাঞ্চলে শ্রমিক-মালিক সম্প্রীতির এক নতুন দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে।
রোববার (২৫ মে) বাংলাদেশ হোসিয়ারি অ্যাসোসিয়েশন কার্যালয়ে অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি জনাব বদিউজ্জামান বদু এবং নারায়ণগঞ্জ হোসিয়ারি শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি জনাব আবদুল মতিন ভুঁইয়া এই ঐতিহাসিক চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন। এই চুক্তির ফলে হোসিয়ারি শ্রমিকদের মুখে ফুটেছে হাসির ঝিলিক।
চুক্তি অনুযায়ী, হোসিয়ারি পণ্যের ১৮ থেকে ৩০ সাইজ পর্যন্ত ১৫ শতাংশ, ৩১ থেকে ৩৬ সাইজ পর্যন্ত ১৫ শতাংশ এবং ৩৮ থেকে ৪২ সাইজ পর্যন্ত ৯ শতাংশ মজুরি বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে। এই মজুরি বৃদ্ধি শ্রমিকদের জীবনযাত্রার মান উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে আশা করা হচ্ছে।
বৈঠক শেষে হোসিয়ারি অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি জনাব বদিউজ্জামান বদু বলেন, “শ্রমিকদের দাবির যৌক্তিকতা উপলব্ধি করে মালিকপক্ষ উদারতার পরিচয় দিয়েছে। আজকের এই সমঝোতা প্রমাণ করে, আলোচনার মাধ্যমেই যেকোনো সমস্যার সমাধান সম্ভব। আমরা বিশ্বাস করি, এই পারস্পরিক বোঝাপড়া ও সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক শিল্পের অগ্রযাত্রায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। আমরা চাই, এই ঐক্যবদ্ধ সম্পর্ক ভবিষ্যতেও বজায় থাকুক।”
তিনি আরও আশ্বস্ত করেন যে, প্রতি দুই বছর পরপর শ্রমিকদের বিভিন্ন দাবি-দাওয়া নিয়ে আলোচনার এই ধারা অব্যাহত থাকবে। উভয় পক্ষের দায়িত্বশীল ও আন্তরিক ভূমিকাতেই এই শান্তিপূর্ণ সমাধান সম্ভব হয়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
এই গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা সভায় হোসিয়ারি সমিতির পক্ষে আরও উপস্থিত ছিলেন সহ-সভাপতি জনাব আব্দুস সবুর খান সেন্টু, সহ-সভাপতি জনাব সাঈদ আহম্মেদ স্বপন এবং পরিচালক জনাব দুলাল মল্লিক, জনাব মিজানুর রহমান মিজান, হাজী শাহিন, জনাব পারভেজ মল্লিক, আলহাজ্ব মনির হোসেন, জনাব বিল্লাল হোসেন, জনাব মো. মাসুদুর রহমান, বাবু বৈদ্যনাথ পোদ্দার, জনাব মো. নাছির শেখ, জনাব আবদুস সোবহান তালুকদার ও জনাব নাছিম আহম্মেদ।
শ্রমিক ইউনিয়নের পক্ষ থেকে উপস্থিত ছিলেন সহ-সভাপতি জনাব মো. রমজান ও জনাব শফিকুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক জনাব আলাউদ্দিন বেপারী, সহ-সাধারণ সম্পাদক জনাব আব্দুল কাদের মিয়া ও জনাব আব্দুর গনি মিয়া, সাংগঠনিক সম্পাদক জনাব আর এ জমজম মোল্লা এবং দপ্তর সম্পাদক জনাব মমিনুল ইসলাম।
এই চুক্তির ফলে নারায়ণগঞ্জের হোসিয়ারি শিল্পে স্থিতিশীলতা ফিরে আসবে এবং শ্রমিক-মালিক সম্পর্ক আরও সুদৃঢ় হবে বলে আশা করা হচ্ছে। এটি অন্যান্য শিল্পের জন্যও একটি অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত হতে পারে।