শুক্রবার (১৬ মে) রাতে নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় নিহত সজলের মা রুনা বেগম বাদী হয়ে এই মামলা দায়ের করেন। সোমবার (২০ মে) থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহীনূর আলম বিষয়টি সংবাদমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন। মামলায় ১০০ থেকে ১৫০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি হিসেবেও উল্লেখ করা হয়েছে।
মামলার প্রধান আসামি করা হয়েছে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে। এছাড়া উল্লেখযোগ্য আসামিদের মধ্যে রয়েছেন সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সাবেক সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী, নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য শামীম ওসমান, তার ছেলে ইমতিয়াজ ওসমান অয়ন, ভাতিজা আজমেরী ওসমান এবং নারায়ণগঞ্জ-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য নজরুল ইসলাম বাবু।
অন্যান্য আসামিদের মধ্যে আছেন সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি মজিবুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক ইয়াসিন হাজী, মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক শাহ নিজাম, নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের সাবেক কাউন্সিলর মতিউর রহমান মতি, সিরাজ মণ্ডল, নুরুউদ্দিন মিয়া, শাহজালাল বাদল, শ্রমিক লীগের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি আব্দুল মতিন মাস্টার, জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক ইকবাল পারভেজ, আড়াইহাজারের সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলাম স্বপন, কৃষক দলের কেন্দ্রীয় নেতা হাবিবুর রহমান মোল্লা, আড়াইহাজার পৌরসভার সাবেক মেয়র সুন্দর আলী এবং আড়াইহাজার উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক খোরশেদ আলম।
মামলার এজাহারে বাদী রুনা বেগম উল্লেখ করেছেন, গত বছরের জুলাই মাসে দেশব্যাপী চলা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে তার ছেলে সজল মিয়াও অংশ নিয়েছিল। গত বছরের ২০ জুলাই বিকেলে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে সিদ্ধিরগঞ্জের শিমরাইল এলাকায় ডাচ বাংলা ব্যাংকের সামনে ছাত্র-জনতার শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা সশস্ত্র হামলা চালায়। এ সময় তার ছেলে সজল মিয়ার পেটে গুলি লাগে। এলাকাবাসী তাকে উদ্ধার করে স্থানীয় একটি হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
রুনা বেগম আরও জানান, দেশের তৎকালীন পরিস্থিতি বিবেচনা করে এবং নিরাপত্তার আশঙ্কায় ছেলের লাশের ময়নাতদন্ত না করেই দ্রুত গ্রামের বাড়ি আড়াইহাজার উপজেলার মাহমুদপুর ইউনিয়নের পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করেন তিনি। সজল মিয়া মৌচাক এলাকায় তার বাবার সাথে একটি জুতার কারখানায় কাজ করত।
এজাহারে আরও অভিযোগ করা হয়, শেখ হাসিনা, ওবায়দুল কাদের, আসাদুজ্জামান খান কামাল ও ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভীর প্ররোচনায় এবং শামীম ওসমান, আজমেরী ওসমান ও অয়ন ওসমানের সরব উপস্থিতিতে ও নির্দেশে অন্যান্য আসামিরা ছাত্র-জনতাকে মারধরসহ গুলি করে সজলকে হত্যা করে।
ওসি শাহীনূর আলম জানান, মামলার বিষয়ে তদন্ত চলছে এবং আইন অনুযায়ী পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।