বুধবার (১৪ মে) দুপুরে সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট হায়দার আলী শুনানি শেষে এ আদেশ দেন বলে জানান আদালত পুলিশের পরিদর্শক কাইউম খান।
একই মামলায় গ্রেপ্তার জিসানের বাবা মো. হানিফ (৫০) ও চাচা জনপ্রিয় অনলাইন কনটেন্ট ক্রিয়েটর শওকত মিথুনের (৩৬) জামিন আবেদনও আদালত নাকচ করেছে বলে জানান এ পুলিশ কর্মকর্তা।
এর আগে গত সোমবার দিবাগত রাতে নগরীর শহীদনগর এলাকার নিজ বাসা থেকে গ্রেপ্তার হন জান্নাতুল ফেরদৌস জিসান (২১)। তিনি স্থানীয় অনলাইন পোর্টাল ‘প্রেস নারায়ণগঞ্জ’র সংবাদদাতা এবং প্রথম আলো পত্রিকার পাঠক সংগঠন বন্ধুসভার পরিবেশ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক। কিশোর ম্যাগাজিন ‘কিশোর আলো’তেও কন্ট্রিবিউটর হিসেবে জিসান লেখালেখি করে বলে জানান তার পরিবারের সদস্যরা।
উচ্চ মাধ্যমিক পাস করার পর বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি নেওয়া জিসান জুলাই আন্দোলনে সক্রিয় ছিলেন। আন্দোলনের সময় পায়ে আঘাতপ্রাপ্তও হন জিসান।
তাদের পক্ষে আদালতে জামিন শুনানিতে অংশ নেন অ্যাডভোকেট আওলাদ হোসেন ও নারায়ণগঞ্জ প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট মাহবুবুর রহমান মাসুম।
আওলাদ হোসেন বলেন, “আমরা আদালতে জামিনের প্রার্থনা করেছিলাম। জিসান একজন সাংবাদিক এবং গত বছরে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে তার সক্রিয় ভূমিকা ছিল। মিথুনের ভিডিওগুলো আন্দোলনকারীদের অনুপ্রেরণা জুগিয়েছে। এই আসামিদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট কোনো অভিযোগ নাই।”
সাংবাদিক জিসানকে এ ধরনের ‘মিথ্যা মামলায়’ সম্পৃক্ত করার মধ্য দিয়ে গণমাধ্যমের স্বাধীনতায় ‘হস্তক্ষেপ’ করা হয়েছে বলেও মন্তব্য করেন সাংবাদিক নেতা ও প্রবীণ আইনজীবী মাহবুবুর রহমান মাসুম।
তিনি বলেন, “আদালতে ঘটনার প্রাসঙ্গিকতা নিয়ে আমরা কথা বলেছি। এইখানে পিও মানে ঘটনাস্থল দুইটা। মামলা হবার কথা ছিল দুইটা। কিন্তু সেখানে দুইটা ঘটনাস্থলকে একসাথে করে পুলিশ মামলা করেছে। ওইদিন কারা পুলিশের গাড়িতে ঢিল ছুড়েছে, লাঠিসোটা নিয়ে দৌড়াদৌড়ি করেছে তা শহরবাসী দেখেছে, এবং তা পত্র-পত্রিকায় এসেছে, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারিত হয়েছে। এইটাও আমরা কোর্টকে বলেছি। গণমাধ্যমকর্মীদের দায়িত্ব পালন করতে জীবনের ঝুঁকি নিতে হয়। ওইদিন তো ঘটনাস্থলে অসংখ্য গণমাধ্যমকর্মীরা ছিল। তাহলে জিসান কেন এই মামলার আসামি হবে? এই ঘটনায় তার আসামি হওয়াটা অবান্তর, এইটাও আদালতকে বলেছি। জিসানকে ভিক্টিম করে সংবাদপত্রের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করা হচ্ছে বলে মনে করি।”
গত ৮ মে রাতে আইভীকে গ্রেপ্তার করতে নগরীর দেওভোগে তার পৈতৃক বাড়ি ‘চুনকা কুটিরে’ গেলে তার সমর্থক ও স্থানীয় এলাকাবাসী বাধা দেন। আইভীও ‘রাতের আঁধারে’ কোথাও যাবেন না বলে জানান। পরে সকালে স্বেচ্ছায় গাড়িতে ওঠেন তিনি। তাকে নিয়ে জেলা পুলিশ সুপার কার্যালয়ে নিয়ে যাওয়ার সময় কালিরবাজার মোড়ে পুলিশের গাড়িবহরে হামলা করা হয়। এতে পুলিশসহ আইভীর বেশ কয়েকজন সমর্থক আহত হন।