নারায়ণগঞ্জের ঐতিহ্যবাহী ওসমান পরিবারের সদস্য ও লাখো জনতার প্রিয় নেতা এবং নারায়নগন্জ -৫ আসনের সাবেক ৪ বারের নির্বাচিত সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা প্রয়াত নাসিম ওসমানের ১০ম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে কোরানখানী, কবর জিয়ারত, নগরীর বিভিন্ন জায়গায় দোয়া, ও হতদরিদ্র অসহায় মানুষের মাঝে রান্না করা খাবার বিতরন করা হয়েছে। মঙ্গলবার (৩০শে এপ্রিল) সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত তার পরিবারের পক্ষে ও দলীয় নেতা-কর্মীরা এ কর্মসূচী পালন করে।
বিকেল ৪টায় প্রয়াত নাসিম ওসমানের কবরে ফুল দিয়ে বিনম্র শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করে মরহুমের রুহের মাগফেরাত কামনা করে দোয়া পরিচালনা করেন মাসদাইর পৌর কবরস্থান এর খতিব । দোয়া শেষে উনার সুযোগ্য সন্তান, যুবসমাজের নয়নের মণি আলহাজ্ব আজমেরী ওসমান,এবং নাতীন আলিফ ওসমান এর নেতৃত্বে কয়েক শতাধীক নেতৃবৃন্দ উপস্হিত ছিলেন। প্রয়াত নেতার কবর জিয়ারত শেষে – – আলহাজ্ব আজমেরী ওসমান নগরীর বেশ কয়েকটি জায়গায় হতদরিদ্র অসহায় মানুষের মাঝে রান্না করা খাবার বিতরন করেন। কর্মসূচী পালন কালে উপস্হিত ছিলেন যুবনেতা কাজী আমির হোসেন, মোঃ নাসির উদ্দীন, মোঃ মনির হোসেন, মোঃ সুমন, শ্রমিক নেতা মোস্তফা কান্ডারী, আনোয়ার হোসেন আনু সহ বিভিন্ন সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।
উল্ল্যেখ যে, প্রয়াত নাসিম ওসমান
নারায়ণগঞ্জ-৫ আসন থেকে ১৯৮৮৪, ১৯৮৬, ২০০৮ ও ২০১৪ সালে জাতীয় সংসদের নির্বাচিত সংসদ সদস্য ছিলেন।
প্রয়াত নাসিম ওসমান নারায়ণগঞ্জের ঐতিহ্যবাহী রাজনৈতিক পরিবারের প্রয়াত ভাষা সৈনিক ও স্বাধীনতা পদকপ্রাপ্ত বীর মুক্তিযোদ্ধা, মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠন, সাবেক এম এল এ, বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্ঠ সহোচর ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠার অন্যতম ব্যক্তিত্ব মরহুম এ কে এম শামসুজ্জোহা ও প্রয়াত ভাষা সৈনিক নাগিনা জোহার বড় ছেলে, সেই সঙ্গে তিনি ছিলেন জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য ও নারায়ণগঞ্জ-৫ আসন থেকে সব থেকে বেশি মেয়াদে নির্বাচিত সংসদ সদস্য।
২০১৪ সালের ১৮ এপ্রিল চিকিৎসার জন্য নাসিম ওসমানকে ভারতে নিয়ে যাওয়া হয়। দিল্লিতে চিকিৎসা নেওয়ার পর তিনি দেরাদুন যান। সেখানে একটি আবাসিক হোটেলে অবস্থানকালে আকস্মিক হৃদরোগে আক্রান্ত হলে তাকে হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে তিনি ৩০ এপ্রিল রাতে ২০১৪ সালে মারা যান।
নাসিম ওসমানের মৃত্যুর পর সংসদে বক্তব্য দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা । নাসিম ওসমানের শোক প্রস্তাবের ওপর আলোচনার সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ওসমান পরিবারের সঙ্গে বঙ্গবন্ধুর একটা নিবিড় সম্পর্ক ছিল। ওই পরিবারে বসেই জন্ম হয়েছিল আওয়ামী লীগের। শামীম ওসমানের দাদা খান সাহেব ওসমান আলী এবং বাবা শামছুজ্জোহা ছিলেন বঙ্গবন্ধুর অত্যন্ত কাছের মানুষ। নাসিম ওসমান বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রতিশোধ নিতে একটি যুব ব্রিগেড গড়ে তুলেছিলেন। পরে জাতীয় পার্টি করলেও তিনি ছিলেন বঙ্গবন্ধুর আদর্শের সৈনিক।
আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে ওসমান পরিবারের অবদানের কথা স্বীকার করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘যদি তাদের প্রয়োজন হয় দেখাশোনা করব।
জীবদ্দশায় নাসিম ওসমান শীতলক্ষ্যা সেতু নির্মাণের ব্যাপারে আপ্রাণ চেষ্টা করেন। সেতু নির্মাণের শেষ দিকেই এ সেতুর নামকরণ করা হয় ‘নাসিম ওসমান সেতু ”।নগরীর বঙ্গবন্ধু সড়কে ছিল জাতীয় পার্টির কার্যালয়। সেখানে নিয়মিত নেতাকর্মীদের সাথে মতবিনিয় ও তাদের কুশলাদি খোজ খবর নিতে সেখানে বসতেন নাসিম ওসমান ।