ঈদের আগে শ্রমিকদের মার্চ মাসের বেতন, পূর্ণ ঈদ বোনাস ও সমস্ত বকেয়া পরিশোধ, নিত্যপণ্যের উচ্চ মূল্য বিবেচনায় শ্রমিকদের মহার্ঘ ভাতা প্রদান, রেশন ব্যবস্থা চালু করা, গণতান্ত্রিক শ্রম আইন প্রণয়ন ও ছাঁটাই—নিযার্তন বন্ধের দাবিতে সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্ট নারায়ণগঞ্জ জেলা শাখার উদ্যোগে আজ বিকাল ৪ টায় নারায়ণগঞ্জ প্রেস ক্লাবের সামনে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্ট নারায়ণগঞ্জ জেলার সভাপতি আবু নাঈম খান বিপ্লবের সভাপতিত্বে মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন গার্মেন্টস শ্রমিক ফ্রন্ট নারায়ণগঞ্জ জেলার সভাপতি সেলিম মাহমুদ, সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম শরীফ, রি—রোলিং স্টিল মিলস শ্রমিক ফ্রন্ট নারায়ণগঞ্জ জেলার সভাপতি জামাল হোসেন, সাধারণ সম্পাদক এস এম কাদির, গার্মেন্টস শ্রমিক ফ্রন্ট গাবতলী—পুলিশ লাইন—তাগারপাড় শিল্পাঞ্চল শাখার সভাপতি হাসনাত কবীর।
নেতৃবৃন্দ বলেন, নিত্যপণ্যের উচ্চ মূল্যের কারণে ঈদ নিয়ে শ্রমিকের মধ্যে হতাশা বিরাজ করছে। দরিদ্র শ্রমজীবী মানুষ ঈদ আসলেই কেবল ভাবতে পারে পরিবার পরিজনের জন্য কিছু ভাল খাবার ও কিছু জামা কাপড় কেনার। এমনিতেই শ্রমিকের মজুরি কম। তাই শ্রমিকরা ঈদের আগে অতিরিক্ত কাজ করে তাদের আয় বাড়ানোর জন্য। কিন্তু মালিকরা ঈদের আগে বেতন—বোনাস নিয়ে কারখানাগুলোতে সংকট তৈরি করে। অধিকাংশ মালিকরা বোনাস না দিয়ে ৫০০/১০০০ টাকা বকশিশ দেয়। অনেক গার্মেন্টসে তাও দেয় না। সরকারি প্রতিষ্ঠানে বেসিকের সমান বোনাস দেয়া হয়। অথচ যাদের উৎপাদনের কারণে দেশে বৈদেশিক মূদ্রা আসে তাদের ঠিকমতো বোনাস দেয়া হয় না। শ্রমিকদের সরকারি প্রতিষ্ঠানের মতো পূর্ণ বোনাস দিতে হবে।
নেতৃবৃন্দ আরও বলেন, ঈদের আগে শ্রমিকের চলতি বেতন পাওয়া ন্যায্য। শ্রমিকদের বেতন বোনাস ঈদের শেষ মুহুর্তে দিলে শ্রমিক বাড়ি যাওয়ার তাড়ায় ভালো করে কেনাকাটা করতে পারে না। শ্রমিকদের দাবি ছিল ঈদের কমপক্ষে ১০ দিন আগে অর্থাৎ ২০ রমজানের মধ্যে শ্রমিকের পূর্ণ বোনাস ও মার্চ মাসের বেতনসহ সমস্ত বেতন পরিশোধ করতে হবে। কিন্তু এ বিষয়ে দায়িত্বহীনভাবে শ্রম প্রতিমন্ত্রী বলেছে ঈদের আগে বেতন বোনাস পরিশোধ করতে হবে। কোন তারিখ উল্লেখ করেনি। এতে মালিকরা বেতন—বোনাস নিয়ে স্বেচ্ছাচার করার সুযোগ পাবে। বেতন বোনাস নিয়ে মালিকদের গড়িমসির কারণে শিল্প এলাকায় যদি শ্রমিক অসন্তোষ তৈরি হয় তারজন্য মালিক ও প্রশাসন দায়ী থাকবে।
নেতৃবৃন্দ বলেন, সরকার গার্মেন্টসে নতুন মজুরি কাঠামো ঘোষণা করেছে। সরকার ঘোষিত নতুন মজুরি কাঠামো অধিকাংশ কারখানায় বাস্তবায়ন হয়নি। চার মাস হয়ে গেল সরকার যে সকল কারখানায় মজুরি বাস্তবায়ন হয়নি তাদের বিরুদ্ধে কোন শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়নি। অন্যান্য সেক্টরে এখনও মজুরি বৃদ্ধির কোন উদ্যোগ নেয়া হয়নি। দেশের ৯০ ভাগ শ্রমিক অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতের। এদের আয় বাড়েনি। শ্রমিকের দীর্ঘদিনের দাবি রেশনের। উচ্চ নিত্যপণ্যের দামের কারণে শ্রমিক খাদ্য তালিকা থেকে খাবার কমিয়ে দিয়েছে। ঋণ করে তাদের সংসার চালানো হচ্ছে। কিন্তু সরকার শ্রমিকের রেশন দেওয়ার ব্যবস্থা করেনি।
নেতৃবৃন্দ মহার্ঘ ভাতা প্রদান, গণতান্ত্রিক শ্রম আইন প্রণয়ন ও শ্রমিক ছাঁটাই—নির্যাতন বন্ধের দাবি জানান।