নারায়নগন্জে ছেলের বিরুদ্ধে সম্পত্তির লোভে মারধর এবং বাড়িতে আটকে রাখার অভিযোগে সংবাদ সম্মেলন করেন বৃদ্ধ বাবা সাইজুদ্দিন মিয়া। বৃহস্পতিবার (২৫ই জানুয়ারি) বিকেলে নগরীর আলী আহমেদ চুনকা পাঠাগার প্রাঙ্গণে এ সংবাদ সম্মেলন করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে সাইজুদ্দিন মিয়া বলেন, আমার রূপগঞ্জের কাঞ্চন পৌরসভায় একটি মিল ফ্যাক্টরী আছে। সেই ফ্যাক্টরী এতোদিন যাবৎ প্রথম স্ত্রীর ৩ ছেলে রফিকুল ইসলাম, শাহজাহান মিয়া এবং তারিকুল ইসলামের মাধ্যমে পরিচালনা করে আসছিলাম। তবে তাদের হাতে ব্যবসা পরিচালনা করায় প্রতি মাসে লোকসান হচ্ছিলো। এক সময় আমার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ হওয়ার উপক্রম তৈরি হয়। এই বিষয়ে তাদেরকে জিজ্ঞাসা করলে তেমন কোন সদত্তোর দেয় না। উল্টো ব্যবসা প্রতিষ্ঠান লুটপাট এবং আমার সাথে বাজে ব্যবহার শুরু করে। এরপর আমি তাদেরকে ব্যবসা থেকে পৃথক করে দেই এবং আমি নিজে ব্যবসা পরিচালনা করি। এর সাথে তাদেরকে মাসিক টাকা দিয়ে থাকি।
তিনি আরো বলেন, গত কয়েক বছর যাবৎ আমার নিজ নামের একটি জমি তাদের নামে লিখে দেওয়ার জন্য চাপ দিতে থাকে। আমি রাজি না হলে আমার প্রতিষ্ঠানের মেশিন পত্রাদি বিক্রি করে প্রায় ৩০ কোটি টাকা আত্মসাৎ করে। এদিকে আমাকে মারধর করে এবং বিভিন্ন মিথ্যা মামলা দেয়। আমি এবং আমার স্ত্রী, সন্তান এবং আমাদের কাজের মেয়েকে তিনদিন আটকিয়ে রেখে কাঞ্চন বাড়ীর মধ্যে। এসময় ৯৯৯ ফোন করে সাহায্য চাওয়ার পর রূপগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার এসে আমাদেরকে উদ্ধার করে। পরবর্তীতে আমরা এ বিষয়ে একটি মামলা করি। বর্তমানে আমি সিদ্ধিরগঞ্জে আমার স্ত্রীর বাবার বাড়ীতে বসবাস করছি।
সাইজুদ্দিন মিয়া বলেন, আমাদের থেকে জায়গা লিখে না নিতে পেরে, আমাদেরকে তৈমুর নামে এক ছেলে এলাকার কাউন্সিলর মিজানুর রহমান লিখনের অফিসে আমার স্ত্রী, পুত্র সহ আসতে বলে। আমার শরীর অসুস্থ্য থাকার কারনে আমার স্ত্রী পারভীন ওসমানের সাথে দেখা করে এবং আমার কথা বলে। এরপর আমি পারভীন ওসমানের অফিসে আসলে আমার ১ম স্ত্রীর সন্তান সহ জৈনিক রিপন ভাওয়াল এবং তৈমুর আমাকে জমি লিখে দেওয়ার জন্য চাপ প্রয়োগ করে। তারা বলে ‘এটা আইনে আছে, আমার ছেলে মেয়েকে জমি লিখে দিতে হবে’। আমি তখন রাজি হই না এবং আমার উপর হওয়া নির্যাতনের কথা তাদের জানাই। পরবর্তীতে আমাকে আগামী ২৭ জানুয়ারি আইনজীবী নিয়ে আসতে বলে। বিষয়টি যেহেতু আদালতে বিচারাধীন তাই আমি আর সে অফিসে যেতে চাইনা। গলাচিপার সেই অফিসে সবাই মিলে আমাদের সাথে খুব বাজে আচরণ করেছে। আমি ভয়ে আছি আমার এই সন্ত্রাসী ছেলে মেয়েরা আমার বর্তমান স্ত্রী এবং আরেক ছেলে শান্তকে যেকোন সময় হত্যা করতে পারে।
সাইজুদ্দিন মিয়া আরো উল্লেখ করেন, আমার জীবদ্দশায় প্রথম স্ত্রী মৃত্যুবরণ করার পর আমি পুনরায় বিয়ে করি। ১ম স্ত্রীর ঘরে ৬ মেয়ে, ৩ ছেলে সহ মোট ৯ জন সন্তান আছে। ২য় স্ত্রীর ঘরে ১ ছেলে আছে। তার নাম আতিকুল ইসলাম শান্ত।
এসময় উপস্হিত ছিলেন সাইজুদ্দিন মিয়ার ২য় স্ত্রী গুলনাহার বেগম, ও তাদের আত্মীয় স্বজন, এলাকাবাসী সহ প্রমূখ।