নাছিমা সিলেট জেলার কুমারপাড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন । তবে দীর্ঘদিন ধরে তিনি নারায়ণগঞ্জ সিদ্ধিরগঞ্জ গলাকাটা পুলস্থ বসবাস করে আসছেন। তার স্বামী আব্দুল বারেক ছিল একজন ট্রাক ড্রাইভার। ট্রাক এক্সিডেন্টে তার স্বামী মৃত্যুবরণ করেন দীর্ঘ ১৫ বছর আগে।
জোসনা(২০),ফারজানা(১৫)ফারিয়া(১০) নামে তিন সন্তানের জননী বিধবা এই নারী।এবং তিনি বড় মেয়েকে বিয়ে দিয়েছেন ও ছোট দুই মেয়ে এক মাদ্রাসায় রেখে পড়াশোনা চালাচ্ছেন।
বর্তমানে তিনি নারায়ণগঞ্জ সিদ্ধিরগঞ্জ উপজেলার শিমরাইল (শুকুষি ডেমরা ও সিদ্ধিরগঞ্জ থানার মধ্যস্থ) এলাকার নজরুল মিয়ার বাড়ি ভাড়াটিয়া।
নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জের শিমরাইলে এই প্রথম একজন নারীকে অটোচালক হিসেবে দেখে অবাক সকলে।স্বামী হারা নাছিমার দীর্ঘদিন যাবত বাস্তবতার সাথে যুদ্ধ করে আসছেন জীবিকা নির্বাহ ও তিন সন্তানকে মানুষ করার লক্ষ্যে।প্রথমে চায়ের দোকান দিয়ে সংসার চালাতেন। বর্তমানে দীর্ঘ তিন বছর যাবত চায়ের দোকানদারের পাশাপাশি। এক বেলা অটো চালিয়ে সংসারের আয় বৃদ্ধি করেছেন।
এই নারী অটো চালক স্বাচ্ছন্দেই যাত্রী পরিবহন করছেন উপজেলার আনাচে-কানাচে। অনেকেই তা দেখে হতবাক হয়েছেন।অনেকে এ নারীকে কাজ করার সাহস যোগাচ্ছেন। অনেকে কৌতূহল বশত যাত্রী হয়ে তার রিকশায় উঠে পড়েন। আর যাত্রীদের সম্মান করে পৌচ্ছে দিচ্ছেন গন্তব্য স্থানে।
১০নভেম্বর সিদ্ধিরগঞ্জ শিমরাইলের মোড়ে এক সাক্ষাৎকারে নাসিমা বলেন, সিলেট জেলার জন্ম আমার।সেখান থেকে বাবা মার সাথে নারায়ণগঞ্জে চলে আসি । এক সময় আব্দুর বারেকের সাথে আমার বিবাহ হয়। আব্দুল বারেক ট্রাক ড্রাইভার ছিল। আমাদের সংসার সুখের ছিল। হঠাৎ করে একদিন আমার স্বামী রোড এক্সিডেন্টে মারা যায়। তখন আমার দুই মেয়ে এবং ছোট সন্তান পেটে ছিল। আমার পিতা-মাতাও নেই। কার কাছে গিয়ে দাঁড়াবো কার কাছে হাত পাতবো।খাবো কি বাড়ি ভাড়া দিব কি কষ্টের দিন যাপন করার পর। সিদ্ধিরগঞ্জ গলাকাটা পুলের পাশে ছোট্ট একটি চায়ের দোকান দেই। দীর্ঘদিন এই দোকানদারি করে সংসার চালাতাম এখন মেয়েদের পড়াশোনার খরচ ঘর ভাড়া দিতে আমি খুব হিমশিম খাচ্ছিলাম। তাই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম একবেলা অটো চালাবো এবং এক বেলা চায়ের দোকানদারি করব। এখন মোটামুটি ভালো আছি সংসার চলছে। অটো চালিয়ে দৈনিক ৫০০থেকে ৬০০টাকাটি। প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত গাড়ি চালাই ।সন্ধ্যার পর থেকে রাত্র ২টা পর্যন্ত চায়ের দোকানদারি করি।বড় মেয়েটিকে বিয়ে দিয়েছি সে ভালো সুখে আছে। আর ছোট দুই মেয়েকে ঢাকায় এক মাদ্রাসায় পড়াশোনা করাচ্ছি।