সোমবার, ০২ ডিসেম্বর ২০২৪, ০২:০১ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
নন্দলালপুরের  প্রতারক ও বহুরূপী জাহিদ হাসানের ষড়যন্ত্রের  ফাঁদ থেকে জুয়েল ন্যায় বিচার ও মুক্তি  চায়   দেশের জনগনকে নিয়ে সরযন্ত্র করলে দাঁতভাঙা জবাব দেয়া হবে –এড, সাখাওয়াত না’গঞ্জে মহানগর বিএনপি’র তাক লাগানো বর্ণাঢ্য র‍্যালি গনহত্যা দিবসে সলিম ও মাহমুদ মেম্বারের নেতৃত্বে শহিদদের প্রতি  শ্রদ্ধা জানালো জাসাস   ৬০০ বছরের ঐতিহ্যবাহী হাজীগঞ্জ শাহী মসজিদের সভাপতি নির্বাচিত হলেন এনামুল হক খন্দকার স্বপন গনহত্যা দিবসে  বিএনপি ও যুবদলের  নেতৃত্বে শহিদদের স্বরণে শ্রদ্ধাঞ্জলী   মরহুম আবেদ আলী ও তার সহধর্মিণী এর ১০ম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে দোয়া অনুষ্ঠিত বক্তাবলিতে জাসাস নেতা মজিদ- সাঈদের নেতৃত্বে শহীদদের স্বরণে শ্রদ্ধাঞ্জলি মামুন মাহমুদের শান্তি সমাবেশে শরীফের তাক লাগানো শোডাউন এলএনজি পাওয়ার প্ল্যান্ট স্হায়ী বাতিল করণের দাবিতে মানববন্ধন

চাষাড়া মোড়ে এরা কারা? আক্রান্ত হচ্ছে যাত্রীরা

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশের সময় : মঙ্গলবার, ১০ অক্টোবর, ২০২৩
  • ১৯৫ 🪪

নারায়ণগঞ্জ শহরের প্রাণকেন্দ্র চাষাড়া অত্যন্ত ব্যস্ততম একটি পয়েন্ট। এই পয়েন্ট দিয়ে চলাচল করে বিভিন্ন রুটের যানবাহন। অতিরিক্ত যানবাহন ও ট্রাফিক পুলিশের উদাসীনতায় দিনের অধিকাংশ সময় মোড়ের চারপাশে যানজট লেগেই থাকে। সাম্প্রতিক সময়ে এই পয়েন্টে ব্যাটারিচালিত ইজিবাইক চলাচল নিষিদ্ধ করে ট্রাফিক পুলিশ। কিন্তু মাসোহারার বিনিময়ে বিশেষ কার্ড বহন করে অনেক ইজিবাইক চাষাড়া মোড় ঘুরে যাত্রী উঠা-নামা করাচ্ছে দিন-রাত। তবে মাসোহারা ছাড়া ইজিবাইক কোন ক্রমে চাষাড়া মোড়ে ঢুকে পড়লে আর রক্ষা নাই। হদুল কটি পড়া হাতে ধারালো (যা দিয়ে গাড়ির চাকা ফুটো করা হয়) লোহার রড নিয়ে কতিপয় সন্ত্রাসী টাইপের যুবক দৌড়ে ছুটে যায় ওই ইজিবাইকের দিকে। এসময় তার আক্রমন থেকে গাড়ির চাকা রক্ষায় দ্রæতগতিতে যাত্রী নামিয়ে ছুটে চলে ইজিবাইক। এতে অহরহ আহত হচ্ছে যাত্রী সাধারণ। সোমবারও এর ব্যতিক্রম ঘটেনি। নারায়ণগঞ্জ তোলারাম বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের প্রথম বর্ষে ছাত্রী হাজরা খাতুন বৈশাখী (১৮) আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। সে নাসিক ১১ নং ওয়ার্ডের আনসার কেস এলাকার খন্দকার পাড়ার মো. বাবুল মিয়ার মেয়ে।

সোমবার (৯ অক্টোবর) কলেজ থেকে বাসার উদ্দেশ্যে বেলা সাড়ে ১২টায় নানার সাথে ইজিবাইকে করে যাচ্ছিল কলেজ ছাত্রী হাজরা খাতুন বৈশাখী। এসময় দৌড়ে গিয়ে ওই ইজিবাইকের চাকা ফুটো করে দেয় হলুদ কটি পড়া যুবক। এতে ইজিবাইকটি উল্টে গেলে ইজিবাইকে থাকা হাজরা, তার নানাসহ আরও ২ শিক্ষার্থী আহত হয়। অজ্ঞাত হয়ে সড়কে পড়ে থাকে হাজরা খাতুন এবং তার নানার হাত কেটে রক্তাক্ত হয়। পরে পথচারীরা ধরাধরি করে ছাত্রী হাজারা খাতুন বৈশাখীকে খানপুর ৩০০ শয্যা হাসপাতালে নিয়ে যায়।

 

হাসপাতালের জরুরী বিভাগের ডাক্তার প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়ার বৈশাখীর জ্ঞান ফিরে আসে । সে মাথায় ও কোমরে মারাত্মক আঘাতপ্রাপ্ত হয়। পরে চিকিৎসকের পরামর্শে নারায়ণগঞ্জ করতোয়া মেডিকেল হসপিটালে তার সিটিস্ক্যান করা হয়।

সিটি স্ক্যান রিপোর্ট দেখে চিকিৎসক তাকে দ্রত ঢাকা মেডিকেল কলেজে হাসপাতালে রেফাড করেন। এমন ঘটনা নিত্যদিনের বলে জানিয়েছেন চাষাড়া মোড়ের ক্ষুদ্র ব্যবসায়ি, পথচারী ও ইজিবাইক চালক ও যাত্রীরা।

ক্ষতিগ্রস্থ ইজিবাইক চালকরা অভিযোগ করে বলেন, আমাদের গাড়ি মান্থলি (মাসিক মাসোহারা) করা না। তাই আমরা চাষাড়া মোড়ে আসলে চাকা ফুটো করে দেয়। যদি বলি আর আসবো না, তাও শোনে না নেশাগ্রস্থ টাইপের হলুদ জামা পড়া যুবকরা। আবার তাদের আক্রমন থেকে চাকা রক্ষা করতে গিয়ে দ্রত যাত্রী নামাতে গেলে অনেক যাত্রী আহত হয়। আবার চলন্ত গাড়ির চাকা ফুটো করে দিলে গাড়ি উল্টে গিয়েও যাত্রী আহত হয়। চাকা ফুটো করে দিলে নতুন চাকা লাগাতে গিয়ে বেশ ক্ষতির মধ্যে পড়ি। ইনকামের পুরো টাকাই খরচ হয়ে যায়। এতে মহাজনের গাড়ি ভাড়াও দিতে পরি না। বাসায় নিবো কি?

 

সরেজমিনে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, চাষাড়া গোল চত্বরে তিনটি পয়েন্টে ট্রাফিক পুলিশের সাথে দেশীয় অস্ত্র (চাকা ফুটো করার যন্ত্র) নিয়ে একদল সন্ত্রাসী ও নেশাগ্রস্থ যুবক হলুদ জামা (কটি) পড়ে ডিউটি পালন করে। শহরের চাষাড়ায় মাসিক মাসোহারা ছাড়া কোন ইজিবাইক ঢুকলে তাদের ১০ টাকা অথবা ২০ টাকা হারে টাকা দিতে হয়। দিনে ১০ বার আসলেও ১০ বারই টাকা দিতে হবে। নাহলে চাকা ফুটো করে স্থান ত্যাগ করার জন্য ধমকাতে থাকে। না গেলে সজোরে গাড়িতে আঘাত করে আতঙ্কের সৃষ্টি করে। অনেক সময় চলন্ত গাড়ির চাকা ফুটো করে দেয় তারা। এতে ইজিবাইক উল্টে আহত হচ্ছে যাত্রী সাধারণ।

প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, নারায়ণগঞ্জ শহর এখন যানজটের শহর। ট্রাফিক ব্যবস্থা ভেঙে পড়ায় এমনটি হয়েছে। ট্রাফিক পুলিশ নেশাগ্রস্থ ছেলেদের হাতে চাকা ফুটো করার দেশীয় অস্ত্র তুলে দিয়েছে। এই যুবকদের দিয়ে অটো স্টীকার ও সিএনজি বাণিজ্য করেন ট্রাফিক বিভাগ।
ট্রাফিক সার্জেন্টের টার্গেট হচ্ছে রেকার বাণিজ্য। এই যুবকরা গাড়ি ধরে দেনদরবার করে ট্রাফিক পুলিশের হয়ে। দেনদরবার না হলে রেকার লাগানো হয় ওই গাড়িতে। এরপর ২ থেকে ৩ হাজার টাকার বিনিময়ে গাড়ি ছাড়া হয়। এভাবে মাসে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে ট্রাফিক বিভাগ।দেনদরবারের নিরাপদ জায়গা হচ্ছে চাষাড়া ট্রাফিক পুলিশ বক্স। তবে বিশেষ স্টীকার লাগানো গাড়ি তারা ধরে না। কারণ ওই সকল গাড়ি প্রতিমাসে নিয়মিত নির্দিষ্ট হারে টাকা পরিশোধ করে ট্রাফিক পুলিশকে।

 

শহিদুল নামে এক অটো চালকের সাথে কথা বলে জানা যায, সাংবাদিক অথবা পুলিশ পরিচয় কাড ব্যবহার না করিলে আমাদের শহরে ঢুকতে দেয় না। অথচ মান্থলি দিলে আমরা দিব্যি শহরে ঘুরতে পারি। মান্থলির পরিমাণ এককালীন ১৫০০ টাকা দিয়ে স্টিকার কার্ড নিতে হয়।
যোগযোগ করা হলে, ট্রাফিক ইন্সপেক্টর আব্দুল করিম জানান, যারা চাকা ফুটো করছে বা হলুদ জামা পড়া যুবকরা আমাদের কেউ না।

এ বিভাগের আরো সংবাদ
©2020 All rights reserved Daily Narayanganj
Design by: SHAMIR IT
themesba-lates1749691102