নির্দলীয় নিরপেক্ষ তদারকি সরকারের অধীনে নির্বাচন দিতে হবে নিত্যপণ্যের দামকমাও,দুর্নীতিবাজ-লুটপাটকারী-ঋণখেলাপি অর্থপাচারকারীদের শাস্তি দাও সাইবার নিরাপত্তা আইন বাতিল কর।
ফ্যাসিবাদী আওয়ামী সরকারের পদত্যাগ, সংসদ ভেঙ্গে নির্দলীয় নিরপেক্ষ তদারকি সরকারের অধীনে নির্বাচন, সংখ্যানুপাতিক নির্বাচন ব্যবস্থা চালু, নিত্যপণ্যের দাম কমানো, সিন্ডিকেট ভাঙ্গা, দুর্নীতি লুটপাট বন্ধ,অর্থপাচারকারী-ঋণখেলাপি-লুটপাটকারী-দুর্নীতিবাজদের শাস্তি এবং সাইবার নিরাপত্তা আইন বাতিলের দাবিতে আজ বেলা ১১ টায় বাম গণতান্ত্রিক জোট নারায়ণগঞ্জ জেলা শাখার উদ্যোগে নারায়ণগঞ্জ প্রেস ক্লাবের সামনে গণঅবস্থান কর্মসূচি পালিত হয়।
কমিউনিস্ট পার্টির নারায়ণগঞ্জ জেলার সাধারণ সম্পাদক শিবনাথ চক্রবর্ত্তীর সভাপতিত্বে গণঅবস্থান কর্মসূচিতে বক্তব্য রাখেন কমিউনিস্ট পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য এডভোকেট মন্টু ঘোষ, বাসদ নারায়ণগঞ্জ জেলা কমিটির সদস্যসচিব আবু নাঈম খান বিপ্লব, বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের নারায়ণগঞ্জ জেলার সাধারণ সম্পাদক বিমল কান্তি দাস, গার্মেন্টস শ্রমিক ফ্রন্ট নারায়ণগঞ্জ জেলার সভাপতি সেলিম মাহমুদ, বাসদ সোনারগাঁ উপজেলার সমন্বয়ক বেলায়েত হোসেন, কমিউনিস্ট পার্টির নেতা দুলাল সাহা, ইকবাল হোসেন, বাসদ নেতা সাইফুল ইসলাম শরীফ, ক্ষেত্র মজুর সমিতির নেতা লোকনাথ বর্মন, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট নারায়ণগঞ্জ জেলার সভাপতি মুন্নী সরদার, ছাত্র ইউনিয়নের নেতা আবীর হোসেন।
নেতৃবৃন্দ বলেন, বর্তমান ফ্যাসিবাদী আওয়ামী সরকার নিত্যপণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণে সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছে। নিত্যপণ্যের দাম আকাশচুম্বি। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে মানুষের জীবন বিপর্যস্ত। সরকার যে সকল নিত্যপণ্যের দাম বেঁধে দিচ্ছে ব্যবসায়ীরা তা মানছে না। ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে ইচ্ছামতো দাম ক্রেতাদের কাছ থেকে আদায় করছে। মন্ত্রীরা বলছে সিন্ডিকেটের উপর তারা হাত দিতে পারবে না। হাজার হাজার কোটি টাকা সিন্ডিকেট ব্যবসায়ীরা সাধারণ মানুষের কাছ থেকে হাতিয়ে নিচ্ছে। ব্যাংক খেলাপিরা ব্যাংকের টাকা আত্মসাৎ করছে। বিদেশে লক্ষ কোটি টাকা পাচার হচ্ছে। অর্থপাচারকারী, ব্যাংক খেলাপি, সিন্ডিকেট ব্যবসায়ী, দুর্নীতিবাজদের অপকর্মের কথা, তাদের নাম পত্রপত্রিকায় আসলেও তাদের ব্যাপারে সরকারের কোন পদক্ষেপ নেই। বাস্তবে এ গণবিরোধী সরকার লুটপাটকারীদের সুযোগ দিয়ে ক্ষমতায় টিকে থাকতে চায়।
নেতৃবৃন্দ আরও বলেন, জনগণের আন্দোলন ও দেশি-বিদেশী নানামুখী চাপে পড়ে সরকার দমনমূলক ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনটি বাতিল না করে পরিবর্তনের মাধ্যমে কৌশলে একই ধরনের নিবর্তনমূলক সাইবার নিরাপত্তা আইন করেছে। যা বাংলাদেশের সংবিধান ও আন্তর্জাতিক মানবাধিকারের পরিপন্থি। সরকার সংসদে অত্যাবশ্যক পরিষেবা বিল-২০২৩ উত্থাপন করেছে। পাশ হলে শ্রমজীবী মানুষের সাংবিধানিক অধিকার ধর্মঘট করার অধিকারও কেড়ে নেয়া হবে। গুম, খুন, হামলা, মামলা নির্যাতন অব্যাহতভাবে চালিয়ে যাচ্ছে। দমনপীড়নের মাধ্যমে গণআন্দোলন দমন করার জন্যই সরকার এ সমস্ত কালো আইন তৈরি করছে।
নেতৃবৃন্দ বলেন, অনির্বাচিত আওয়ামী সরকারের ফ্যাসিবাদী দুঃশাসনে জনগণের জীবনে চরম বিপর্যয় নেমে এসেছে। মানুষ এই ফ্যাসিবাদী সরকারের শাসন থেকে মুক্তি চায়।
২০১৪ সালে ভোটারবিহীন নির্বাচনের মাধ্যমে এবং ২০১৮ সালে গভীর রাতে ভোট ডাকাতি করে সরকার ক্ষমতায় এসে জনগণের বিরুদ্ধে অপশাসন চালিয়ে যাচ্ছে। সরকার আবারও ক্ষমতায় আসার জন্য আরপিও সংশোধন করে ইসির ক্ষমতা খর্ব করেছে। নির্বাচন কমিশনসহ সকল সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলো ধ্বংস করা হয়েছে। দলীয় সরকারের অধীনে যে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয় তা ইতিমধ্যে প্রমাণিত হয়েছে। ফলে বর্তমান আওয়ামী সরকারকে অবিলম্বে পদত্যাগ করতে হবে, সংসদ ভেঙ্গে দিয়ে নির্দলীয় তদারকি সরকারের অধীনে নির্বাচন দিতে হবে। নির্বাচনে কালো টাকা, ধর্মের ব্যবহার বন্ধ করে সংখ্যানুপাতিক নির্বাচন ব্যবস্থা চালু করতে হবে।
নেতৃবৃন্দ ফ্যাসিবাদী আওয়ামী সরকারকে পদত্যাগে বাধ্য করতে তীব্র গণআন্দোলন গড়ে তোলার জন্য সকল প্রগতিশীল গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল, সংগঠন ও জনগণের প্রতি আহবান জানান।