আর ক’দিন বাদেই শুরু হতে যাওয়া বাঙালি হিন্দুদের সবচেয়ে বড় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষে নারায়ণগঞ্জে এবার ২২২টি মণ্ডপে পূজা অনুষ্ঠিত হবে। গত বছরের ২১৩টি মণ্ডপের তুলনায় এবার ১০টি মণ্ডপ বৃদ্ধি পেয়েছে, যা জেলার ক্রমবর্ধমান উৎসবমুখর পরিবেশের ইঙ্গিত দেয়। বুধবার সকালে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত এক প্রস্তুতিমূলক সভায় এই তথ্য জানানো হয়।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম মিঞার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এই গুরুত্বপূর্ণ সভায় জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের পাশাপাশি সেনাবাহিনীর প্রতিনিধি, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ, সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনের সদস্য এবং জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
সভায় পূজার সার্বিক ব্যবস্থাপনা ও শান্তিপূর্ণ উদযাপনের জন্য বিস্তারিত আলোচনা হয়। বিশেষ করে পূজা মণ্ডপগুলোর নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ, যানজট নিরসন, ফুটপাত হকারমুক্ত রাখা এবং শীতলক্ষ্যা নদীতে সন্ধ্যার পর বালুবাহী ট্রলার চলাচল বন্ধ রাখার ওপর জোর দেওয়া হয়।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম মিঞা নারায়ণগঞ্জের ১৪৩ বছরের দুর্গাপূজা উদযাপনের ঐতিহ্যকে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হিসেবে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, “এটি আমাদের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির ঐতিহ্য। সবাইকে দায়িত্বশীল হয়ে সহযোগিতা করতে হবে, তাহলেই উৎসব সফল ও শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন হবে। শুরু থেকে সফলতার সাথে শেষ করা এবং সকলের অংশগ্রহণেই হবে এই উৎসবের স্বার্থকতা। এই উৎসবটি আমাদের সকলের তাই দায়িত্ব নিয়ে কাজ করতে হবে। আমাদের পক্ষ থেকে যে সহযোগিতা চাওয়া হয়েছে আমরা সেটি সর্বোচ্চ দিয়ে চেষ্টা করবো।”
জেলা প্রশাসন সূত্র অনুযায়ী, এবারের দুর্গাপূজায় সদর উপজেলায় ৭৯টি, বন্দর উপজেলায় ২৯টি, সোনারগাঁয়ে ৩৫টি, আড়াইহাজারে ৩৬টি এবং রূপগঞ্জ উপজেলায় ৪৪টি মণ্ডপে পূজা অনুষ্ঠিত হবে। সব মিলিয়ে মোট ২২৩টি মণ্ডপেই হবে এই মহা আয়োজন।
প্রস্তুতিমূলক সভায় উপস্থিত ছিলেন জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জসীম উদ্দিন, নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের সচিব নূরে কুতুবুল আলম, সেনাবাহিনীর মেজর আয়াজ উদ্দিন, জেলা বিএনপির আহ্বায়ক অধ্যাপক মামুন মাহমুদ, যুগ্ম আহ্বায়ক মাশুকুল ইসলাম রাজীব, মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খান, সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট আবু আল ইউসুফ খান টিপু, জামায়াতে ইসলামী মহানগরের আমীর মাওলানা আবদুল জব্বার, সাবেক আমীর মাওলানা মাঈনুদ্দিন আহমাদ, ইসলামী আন্দোলন মহানগরের সভাপতি মুফতি মাসুম বিল্লাহ, গণসংহতি আন্দোলন নারায়ণগঞ্জ জেলার সমন্বয়কারী তরিকুল সুজন, জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) জেলা সমন্বয়কারী আব্দুল্লাহ আল-আমিন, দক্ষিণাঞ্চলের সংগঠক শওকত আলী, জেলা সংগঠক আহমেদুর রহমান তনু, জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি সাংবাদিক বীর মুক্তিযোদ্ধা শংকর কুমার দে, সাধারণ সম্পাদক শিখন সরকার শিপন, পূঁজা উদযাপন ফ্রন্ট জেলার আহ্বায়ক বিপ্লব কুমার সাহা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক সদস্য সচিব জাবেদ আলম প্রমুখ।
এই বিপুল সংখ্যক মণ্ডপে সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে পূজা উদযাপনের জন্য সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টার উপর গুরুত্বারোপ করা হয়েছে।