আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে বিএনপির রাষ্ট্র সংস্কারের ৩১ দফা রূপরেখা বাস্তবায়ন এবং নারীর ক্ষমতায়নের লক্ষ্যে নারায়ণগঞ্জে এক ব্যতিক্রমী উঠান বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বুধবার (২৬ নভেম্বর) বিকেল সাড়ে ৩টায় নগরীর মাসদাইর বেকারীর মোড় এলাকার পতেঙ্গার মাঠে এই উঠান বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনে বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী ও জেলা যুবদলের সদস্য সচিব মশিউর রহমান রনি।
বৈঠকটি ছিল গতানুগতিক রাজনৈতিক সমাবেশের চেয়ে ভিন্ন। অনুষ্ঠানে আগত হাজারও নারীকে মশিউর রহমান রনি মিষ্টি মশলাযুক্ত পান এবং শিশু-কিশোরদের হাতে ডেইরি মিল্ক চকলেট তুলে দেন। প্রার্থীর এমন ব্যতিক্রমী আতিথেয়তায় মুগ্ধ হন এলাকাবাসী।
অনুষ্ঠানে বিশেষ মাত্রা যোগ করে রনির পরিবারের সদস্যদের উপস্থিতি। তাঁর মা, স্ত্রী এবং খালা আবেগাপ্লুত কণ্ঠে রনির জন্য দোয়া চেয়ে বক্তব্য রাখেন। পরিবারের সদস্যদের উপস্থিতিতে এলাকার নারী-পুরুষ ও শিশু-কিশোররা আনন্দিত হয়ে মুহুর্মুহু করতালির মাধ্যমে তাঁদের সাদরে গ্রহণ করেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে মশিউর রহমান রনি বলেন, “বর্তমান সংকটময় পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের জন্য আমাদের নেতা তারেক রহমান ৩১ দফা উপস্থাপন করেছেন। এই রূপরেখা বাস্তবায়নের বার্তা নিয়ে আমরা আপনাদের ঘরে ঘরে যাচ্ছি। বিশেষ করে মা-বোনদের কাছে যাওয়ার জন্য দেশনায়ক তারেক রহমান নির্দেশ দিয়েছেন।”
নারীর ক্ষমতায়ন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “৩১ দফার ২৪ নম্বর দফায় নারীর ক্ষমতায়ন ও মূল্যায়নের কথা স্পষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়েছে। নারীদের সাংসারিক কাজে যেন ব্যাঘাত না ঘটে, সেজন্য একটি ‘ফ্যামিলি কার্ড’-এর ব্যবস্থা করা হবে। এর মাধ্যমে নারীরা অনায়েসে তাদের পরিবারের ভরণ-পোষণ করতে পারবেন। মা যদি সংসার ও সন্তানের প্রতি খেয়াল রাখতে পারেন, তবে সেই সন্তান কখনো বিপথগামী হয় না।”
নিজের শৈশব-কৈশোরের স্মৃতিচারণ করে রনি বলেন, “এই মাঠেই আমি আমার কিশোর জীবন পার করেছি। আজ এখানে দাঁড়িয়ে কথা বলতে পারা আমার নতুন জীবন ও ভাগ্যের লিখন।”
এলাকার উন্নয়ন ও সাবেক এমপি শামীম ওসমানের কঠোর সমালোচনা করে তিনি বলেন, “আমি এই এলাকার সন্তান, আমি চাই এলাকার উন্নয়ন হোক। অথচ পূর্বে যিনি এমপি ছিলেন, তিনি উন্নয়নের নামে ১ হাজার ৩শ কোটি টাকা লুটপাট করেছেন। ৬ হাজার কোটি টাকা দিয়ে নারায়ণগঞ্জকে সিঙ্গাপুর বানানোর ঘোষণা দিলেও বাস্তবে তার কোনো অস্তিত্ব নেই। সেই টাকা তিনি বিদেশে পাচার করেছেন।”
নিজের সততার চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়ে তিনি বলেন, “আমরা সামান্য অর্থ ব্যয়ে গাবতলীর জলাবদ্ধতা দূর করেছি, কল্যাণী খাল পরিষ্কার করেছি। কেউ যদি আমার দিকে আঙুল তুলে বলতে পারে আমি মশিউর রহমান রনি চাঁদাবাজ, তবে আমি এই সমাজ ছেড়ে চলে যাব। আর যদি মনে করেন সমাজের উন্নয়ন প্রয়োজন, তবে আমাদেরকে সুযোগ দিতে হবে। দল যদি আমাকে মূল্যায়ন করে, তবে এই আসনটি আমি দলকে উপহার দেব।”
উক্ত উঠান বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন এনায়েতনগর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি অ্যাডভোকেট আলমগীর হোসেন, সাবেক মহিলা মেম্বার রোজিনা আক্তার, ছাত্রদলের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মেহেদি হাসান দোলন এবং জেলা ছাত্রদলের সাবেক নেতা সিদ্দিকুর রহমান উজ্জলসহ স্থানীয় বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতৃবৃন্দ।