এক সময়ের ব্যস্ত শিল্পনগরী নারায়ণগঞ্জ এখন যানজটের নগরী হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছে। শহরের ক্রমবর্ধমান এই যানজট নিরসনে স্থানীয় প্রশাসন, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, সামাজিক সংগঠন, ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান এবং দানশীল ব্যক্তিবর্গ একজোট হয়ে নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম মিঞা ও জেলা পুলিশ সুপার এর আহ্বানে সাড়া দিয়েছেন। তারা নারায়ণগঞ্জ ট্রাফিক পুলিশকে বিভিন্নভাবে সহযোগিতা করছেন। তবে নগরবাসীর মতে, যত্রতত্র গাড়ি পার্কিং, হকারদের অবৈধ দখল এবং অটোরিকশার দাপট সম্পূর্ণভাবে যানজট নিরসনের পথে বড় বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে।
এই সকল প্রতিকূলতা সত্ত্বেও নারায়ণগঞ্জ ট্রাফিকের দায়িত্বপ্রাপ্ত ইন্সপেক্টর এম.এ. করিম তার চৌকস টিম ও স্বেচ্ছাসেবী ছাত্রকর্মীদের নিয়ে অক্লান্ত পরিশ্রম করে চলেছেন। ভাদ্র মাসের তীব্র রোদের মধ্যে মাথার ঘাম পায়ে ফেলে দিনরাত সড়কের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্ত পর্যন্ত ছুটে বেড়াচ্ছেন টিআই করিম। দুর্ঘটনা এড়াতে, সঠিক নিয়মে পরিবহন চলাচল নিশ্চিত করতে এবং যানজট নিরসনে তিনি তার দায়িত্ব নিষ্ঠার সাথে পালন করছেন। তার কর্মদক্ষতা ও দায়িত্ববোধের কারণে তিনি অনেকের কাছেই প্রশংসিত।
নারায়ণগঞ্জ জেলা ট্রাফিক বিভাগের ইনচার্জ এমএ করিমের সাথে এক আলোচনায় তিনি জানান, “আমি আমার সর্বোচ্চ দায়িত্ববোধ দিয়ে যানজট নিরসনে কাজ করে যাচ্ছি। নারায়ণগঞ্জ একটি শিল্প নগরী এবং বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল হওয়ায় এখানে অসংখ্য গণ জনবসতি রয়েছে। ফুটপাত দখল এবং রাস্তার ধারণক্ষমতার অতিরিক্ত যানবাহন, বিশেষ করে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার কারণে স্বাভাবিক যান চলাচলে ব্যাঘাত সৃষ্টি হচ্ছে। রেলগেট এবং রাস্তা ও ড্রেনেজ নির্মাণ কাজের জন্যও যান চলাচল ব্যাহত হচ্ছে ও যানজট সৃষ্টি হচ্ছে।”
তিনি আরও বলেন, “আমাদের পুলিশ সুপার জসিম উদ্দিন মহোদয় স্যার যানজট নিরসনে বিশেষ গুরুত্ব সহকারে কাজ করার নির্দেশনা দিয়েছেন। নারায়ণগঞ্জবাসী যাতে সহজে কর্মস্থল, স্কুল-কলেজে যাতায়াত করতে পারে, সেই স্বার্থে আমাকে তথা ট্রাফিক বিভাগকে অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়ে যানজট নিরসনের ব্যবস্থা নিতে বলেছেন। আমাদের ট্রাফিক সদস্যের স্বল্পতা সত্ত্বেও আমরা সর্বদা পরিস্থিতি সহনীয় পর্যায়ে রাখতে সচেষ্ট আছি।”
টিআই করিম জানান, তাদের এই কার্যক্রমে নারায়ণগঞ্জের সকল রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক্স মিডিয়ার সাংবাদিক ভাইয়েরা, বিকেএমইএ এবং চেম্বারস অফ কমার্স সহ অন্যান্য ব্যবসায়ী বৃন্দ সহযোগিতা করছেন। জেলা প্রশাসন সহ বিকেএমইএ ও চেম্বারস অফ কমার্সের পক্ষ থেকে অতিরিক্ত ছাত্রও তাদের সহযোগিতার জন্য দেওয়া হয়েছে, যার ফলে যানজট সহনীয় পর্যায়ে রাখা সম্ভব হয়েছে।
তিনি আশা প্রকাশ করেন, বিবি রোডের ড্রেনেজ এর কাজ এবং পঞ্চবটির রাস্তার কাজ দ্রুত সম্পন্ন হলে ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা আরও উন্নত হবে। আগত দুর্গাপূজাকে সামনে রেখে এবং জনসাধারণের যাতায়াতের লক্ষ্যে পুলিশ সুপার মহোদয় বিশেষ নির্দেশনা দিয়েছেন, এবং অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ট্রাফিক মহোদয় ফিল্ডে থেকে তা তদারকি করে থাকেন।
টিআই করিম চালক, মালিক এবং যাত্রীদের সহযোগিতা কামনা করে বলেন, “সবাই আইন মেনে চলে শৃঙ্খলাভাবে গাড়ি চালালে পরিস্থিতি আরও ভালো হবে। বর্তমানের মতো ভবিষ্যতেও সবার সহযোগিতা অব্যাহত থাকলে নারায়ণগঞ্জের যানজট সহনীয় পর্যায় থেকে পুরোপুরি নিরসন করা সম্ভব হবে বলে মনে করি। আমি আমার চেষ্টা এবং কৌশলের সবটুকু দিয়ে নারায়ণগঞ্জবাসীকে স্বাচ্ছন্দ্য চলাফেরার ব্যবস্থা করব, ইনশাআল্লাহ।”