মুক্তিযুদ্ধাদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে ও তাদের স্মরণ করে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মাহমুদুল হক বলেছেন, ১৯৪৭ সালে যখন পশ্চিম ও পূর্ব পাকিস্তান জন্ম নেয়, পশ্চিম পাকিস্তানিরা আমাদের শোষণ করে নিজেদের সমৃদ্ধশালী করেছিল। আামদের উৎপাদন করা পাট বাইরে রপ্তানি করা হলে যে আয় হত তার বেশিরভাগ ব্যয় হত পশ্চিম পাকিস্তানে। ২৩ বছর ধরে তারা আমাদের শোষণ করেছে। আর আমাদের বঙ্গবন্ধু তাদের বিরুদ্ধে আন্দোলন করেছেন। ১৯৭১ এ তিনি যুদ্ধে ঝাপিয়ে পড়ার ডাক দিয়েছেন। মুক্তিযোদ্ধারা জীবণ উৎসর্গ করে, নানা ত্যাগ স্বীকার করে দেশের জন্যে লড়েছেন। আমরা এই বাংলাদেশ তাদের জীবণের বিনিময়ে পেয়েছি, ৩০ লক্ষ শহীদের রক্তের বিনিময়ে পেয়েছি।
শনিবার (১৬ই ডিসেম্বর) দুপুরে নগরস্হ জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে জেলার মুক্তি যোদ্ধাদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিন এসব কথা বলেন ।
নারায়নগন্জ জেলা প্রশাসনের আয়োজনে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন জেলার পুলিশ সুপার গোলাম মোস্তফা রাসেল, নারায়নগন্জ জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কাউন্সিলের কমান্ডার মোহাম্মদ আলী, স্থানীয় সরকারের উপপরিচালক মোহাম্মদ আনোয়ার হোসা্ইন, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোঃ আব্দুল হাই, বীর মুক্তিযোদ্ধা এ্যাড, নুরুল হুদা, জুলহাস ভূইয়া, সাবেক কমান্ডার মোঃ সামিউল্লাহ মিলন, নারায়নগন্জ জেলার সিভিল সার্জন সহ প্রমূখ।
জেলা প্রশাসক আরও বলেন, এ জেলায় মুক্তিযুদ্ধের ঘটনা নিয়ে আমি বিভিন্ন মুক্তিযুদ্ধের বই পড়েছিলাম। নারায়ণগঞ্জে পাকিস্তানিদের প্রবেশ প্রতিরোধ করতে মুক্তিযোদ্ধারা মাসদাইরে প্রতিরক্ষা ঘাটি তৈরী করেছিলেন।
এরপর চাষাড়া, বক্তাবলী সহ নানা এলাকায় মুক্তিযোদ্ধারা পাকিস্তনিদের সাথে লড়াই করেন। এসব ঘটনা জানার পর আমি চিন্তা্য় পড়ে যাই যে, তাদের বুকে কতটা সাহস থাকলে, কতটা দৃঢ় মনোবল থাকলে হাতে অস্ত্র না থাকলেও সশস্ত্র বাহিনীর মোকাবেলা করেছেন। জীবণ উৎসর্গ হবে ভেবেও তারা লড়েছেন। মুক্তিযোদ্ধাদের এই চেতনা আমাদের ধারণ করতে হবে। মুক্তিযদ্ধের ইতিহাস, পাকিস্তানিদের বর্বরতা আমাদের নতুন প্রজন্মকে জানাতে হবে। কতটা কষ্টের মধ্য দিয়ে এই দেশ পেয়েছি তা তাদের জানাতে হবে। তবেই নতুন প্রজন্ম দেশের উন্নয়নে কাজ করতে উদ্বুদ্ধ হবে।
নতুন প্রজন্মের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, নতুন প্রজন্মের কাছে মুক্তিযোদ্ধারা হলেন জ্বলন্ত সাক্ষী। কতটা কষ্ট, কতটা শ্রম, কতটা সাহস বুকে এনে তারা পৃথিবীর বুকে স্বাধীন একটি রাষ্ট্র বাংলাদেশ গড়েছেন তা বোঝা যাবে তাদের সান্নিধ্যে এসে।
এরপর সকল মুক্তিযুদ্ধাদের মাঝে উপহার সহ খাবার পরিবেশন করা। আলোচনা সভার পূর্বে শহিদ মুক্তিযুদ্ধাদের স্বরনে একমিনিট নিরবতা পালন করে।