নারায়ণগঞ্জ সিটি করপেরেশনের ৯নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ইস্রাফিল প্রধান আবার পল্টি দিয়ে ওয়ার্ড বিএনপির কমিটিতে স্থান করে নিলেন। অথচ নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য শামীম ওসমানের হাতে ফুলের নৌকা দিয়ে আওয়ামীলীগের যোগদান করেছিলেন তিনি। শুধু তাই নয়, রীতিমত শামীম ওসমানের পা ছুঁয়ে সালাম করেছিলেন তিনি। দীর্ঘদিন ইস্রাফিল প্রধান বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত থাকার পর সুবিধা নিতে আওয়ামীলীগের যোগ দিয়ে আবার বিএনপিতে আসার বিষয়টিকে কোনভাবেই মেনে নিতে পারছেন না বিএনপির মাঠ পর্যায়ে ত্যাগি নেতাকর্মীরা। তারা বলছেন, আগামীতে আওয়ামীলীগের দু:সময় আঁচ করতে পেয়ে ও বিএনপির সুদিন ফিরে আসতেছে এমনটা ভেবে সে বিএনপিতে ঢুকেছে। যদি বিএনপির সুদিন না আসে তাহলে তো সে আবার আওয়ামীলীগে ফিরে যাবে। এমন পল্টিবাজ লোক বিএনপিতে ঢুকতে দেয়া সঠিক হয়নি। এরা দলের জন্য ক্ষতি বয়ে আনবে।

এদিকে ইসরাফিল প্রধান বিএনপি’র পদ পাওয়ায় গত ১৫ অক্টোবর বিএনপির স্থানীয় নেতাকর্মীরা আনন্দ উল্লাস করেছে। একটি ছবিতে দেখা যায় ইস্রাফিল প্রধানকে মিস্টি খাইয়ে দিচ্ছে সিদ্ধিরগঞ্জ থানা স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক সজিব ও ৯নং ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি প্রার্থী মাইনুদ্দিন জনি। ফলে এই ছবিতে সুস্পষ্টভাবে ফুটে উঠেছে ইসরাফিল প্রধান বিগত আমলে বিএনপির রাজনীতির মধ্য দিয়েই উঠে এসেছেন। পিতৃপরিচয় যেমন ভোলা যায় না ঠিক তেমনি বিএনপিকে ভুলতে পারছেন না। ছদ্দবেশ ধারন করে লোক দেখানোভাবে আওয়ামী লীগে যোগদান করলেও তিনি জ্বলন্ত বিএনপিরি লোক।

বিএনপি দল করে নারায়নগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে কৌশলে বনে যান ৯নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর। কিন্তু দীর্ঘ ১৫ বছর বিএনপি দল ক্ষমতার বাইরে থেকে দলীয় কর্মসূচী পালন করলেও তাকে কোন মিছিল মিটিংয়ে দেখা যায়নি। কৌশলে দলের সাথে গোপনে যোগাযোগ বজায় রেখে কোন কর্মসূচীতে প্রকাশ্যে না গিয়ে বিরত থেকেছেন হামলা মামলা থেকে রক্ষা পাওয়া ও কাউন্সিলির পদ ধরে রাখার জন্য।

অপরদিকে ছদ্মরূপ ধারন করে নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য একেএম শামীম ওসমানের সভায় মঞ্চে উঠে ফুলের নৌকা প্রতীক দিয়ে সংসদ সদস্য এ কে এম শামীম ওসমানের পা ধরে সালাম করে আওয়ামী লীগে যোগদান করতে দেখা যায়। আওয়ামী লীগে যোগদান করেও কোন মিছিল মিটিং এ দেখা যায়নি বলে অনেক কর্মীদের ক্ষোভ।

ইসরাফিল বিএনপির মিছিল-মিটিং না করলেও তার সেকেন্ড ইন কমান্ড বর্তমান সিদ্ধিরগঞ্জ থানা স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক সজীবকে দিয়েই তার বিএনপির সকল কর্মকান্ড চালিয়ে যান। সজীবের সকল মিছিল মিটিং করার জন্য আর্থিক সহায়তা করে থাকেন এই কাউন্সিলর। এই সজীব রাজনৈতিক জ্বালা পোড়ার মামলার আসামি। একটি ছবিতে লক্ষ্য করা যায় কাউন্সিলর ইসরাফিল প্রধান সিদ্ধিরগঞ্জ থানা বিএনপির পদ পাওয়ার আনন্দে ওই ওয়ার্ড বিএনপির নেতাকর্মীদের নিয়ে আনন্দ উল্লাসে মেতে উঠেছেন।

নিজ হাতে তাকে মিষ্টি খাইয়ে দেওয়া, ১৫ই অক্টোবর তার জন্মদিনে ওয়ার্ড বিএনপির নেতা মাইনুদ্দিন ও সিদ্ধিরগঞ্জ থানা স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক তারই সেকেন্ড হ্যান্ড সজীবসহ ৯নং ওয়ার্ড বিএনপির অন্যান্য নেতাকর্মীরা তাদের প্রিয় নেতা ইসরাফিল প্রধানকে কেক খাওয়ানোর মাধ্যমে উৎসব পালন করছেন। এবং সাম্প্রতিক বিএনপির ঘরোয়া বৈঠকগুলোতে এই কাউন্সিলর ইসরাফিল প্রধান অংশগ্রহণ করে থাকেন বলে জানা যায়। এতে ওই ওয়ার্ড তথা পুরো সিদ্ধিরগঞ্জ আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের মধ্যে চলছে চরম ক্ষোভের বহি:প্রকাশ। আর তিনি বিএনপির উপর লেভেলের নেতাদের সঙ্গে সক্রিয় সখ্যতা বজায় রাখেন। সাম্প্রতিক বিগত কিছুদিন আগে সিদ্ধিরগঞ্জ থানা বিএনপির কমিটির পদেও দেখা যায় তাকে।

এ বিষয় নিয়ে সাম্প্রতিক নারায়ণগঞ্জের স্থানীয় বেশ কয়েকটি গণমাধ্যম গুলিতেও লেখালেখি হয়েছে।

সাধারণ মানুষের মনে এখন প্রশ্ন ইস্রাফিল আসলে কার? তার প্রকৃত চরিত্র কি?

নাসিক ৯নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর ইসরাফিল প্রধানের সাথে এ বিষয়ে কথা বললে তিনি বলেন, আমার নামে কে কি বলছে আমি জানিনা। আমি অসুস্থ দীর্ঘদিন যাব। আমি অসুস্থতার কারণে চিকিৎসার জন্য এক বছর যাবত কয়েকবার চেন্নাই গিয়েছি। ভারত বাংলাদেশে যাওয়া আসার মধ্যেই আমি আছি। আওয়ামীলীগ ও বিএনপির সকল জনগণ আমাকে ভোট দিয়ে তিনবার কাউন্সিলর বানিয়েছে। তাই আমি সবার।