“প্লাস্টিক দূষণ আর নয়”—এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে নারায়ণগঞ্জে নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে বিশ্ব পরিবেশ দিবস পালিত হয়েছে। দিবসটি উপলক্ষে জেলা প্রশাসন ও পরিবেশ অধিদপ্তর, নারায়ণগঞ্জ যৌথভাবে শোভাযাত্রা, আলোচনা সভা, পুরস্কার বিতরণী ও বৃক্ষরোপণ কর্মসূচির আয়োজন করে।
বুধবার (৫ জুন) সকালে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে থেকে একটি বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বের করা হয়। শোভাযাত্রার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন নারায়ণগঞ্জের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম মিঞা। এতে জেলার বিভিন্ন শিল্পকারখানার প্রতিনিধি, স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থী, পরিবেশবাদী সংগঠনের কর্মী, এনজিও প্রতিনিধি, সুশীল সমাজের সদস্য এবং প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা অংশগ্রহণ করেন। শোভাযাত্রাটি শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে পুনরায় জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে এসে শেষ হয়।
পরে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে এক আলোচনা সভা ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। পরিবেশ অধিদপ্তর নারায়ণগঞ্জের উপপরিচালক এ.এইচ.এম রাসেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম মিঞা।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে জেলা প্রশাসক বলেন, “পরিবেশ আমাদের অস্তিত্বের সঙ্গে জড়িত। তাই এর সুরক্ষায় ব্যক্তি, সমাজ ও রাষ্ট্র—সবাইকে নিজ নিজ অবস্থান থেকে সক্রিয় ও দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতে হবে। ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য একটি নিরাপদ ও বাসযোগ্য পৃথিবী রেখে যেতে হলে আমাদের এখনই সচেতন হতে হবে।”
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নারায়ণগঞ্জের সিভিল সার্জন ডা. এ এফ এম মুশিউর রহমান এবং অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. আলমগীর হুসাইন।
সিভিল সার্জন ডা. মুশিউর রহমান বলেন, “পরিবেশ দূষণের সঙ্গে জনস্বাস্থ্যের বিষয়টি ওতপ্রোতভাবে জড়িত। পরিবেশ রক্ষা কোনো একক ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের দায়িত্ব নয়, এর জন্য প্রয়োজন সম্মিলিত উদ্যোগ ও জনসচেতনতা।”
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মো. আলমগীর হুসাইন তাঁর বক্তব্যে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অর্জনে পরিবেশবান্ধব উন্নয়নের ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
সভাপতির বক্তব্যে উপপরিচালক এ.এইচ.এম রাসেদ বলেন, “পরিবেশের আবেদন সার্বজনীন। একে রক্ষা করতে হলে সকলের সম্মিলিত দায়িত্ববোধ জরুরি।” তিনি ক্ষতিকর সিঙ্গেল ইউজ প্লাস্টিকের ব্যবহার বর্জন করে পরিবেশ সুরক্ষায় সক্রিয় ভূমিকা রাখার জন্য সকলের প্রতি আহ্বান জানান।
এর আগে, পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মো. মোবারক হোসেন স্বাগত বক্তব্য দেন এবং সহকারী পরিচালক মো. রাসেল মাহমুদ পরিবেশ সংরক্ষণের বিভিন্ন দিক নিয়ে একটি সচিত্র প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন।
অনুষ্ঠান শেষে দিবসটি উপলক্ষে আয়োজিত শিশু-কিশোরদের চিত্রাঙ্কন ও রচনা প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেওয়া হয়। সবশেষে স্থানীয় জনগণ ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলোর মাঝে ফলজ ও বনজ গাছের চারা বিতরণের মাধ্যমে দিনের কর্মসূচির সমাপ্তি ঘোষণা করা হয়।